পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬০
কুরু পাণ্ডব
[৪

ভস্মসাৎ করিলে তোমার এই পাপের প্রায়শ্চিত্ত হইবে। সহদেব! ত্বরায় অগ্নি আনয়ন কর।

 অর্জ্জুন এই কথার অগ্রজকে তিরস্কারপূর্বক কহিলেন—

 হে আর্য্য! তুমি পূর্ব্বে ত কখনও ঈদৃশ দুর্ব্বাক্য প্রয়ােগ কর নাই। মনের আবেগে শত্রুগণের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করিও না। দেখ জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা ক্ষত্রধর্ম্মানুসাৱেই ক্রীড়া করিয়াছেন, ক্ষত্রধর্ম্মানুসারেই অবনত মস্তকে পরাজয় স্বীকার করিয়াছেন।

 এদিকে যখন দুঃশাসন সভামধ্যে একবস্ত্রা দ্রৌপদীর বসন আকর্ষণ করিবার উপক্রম করিল, তখন দ্রৌপদী একান্ত বিপন্ন হইয়া আর্ত্তনাদ করিতে লাগিলেন। সেই বিপদে স্বয়ং ধর্ম্ম অন্তরিত হইয়া দ্রোপদীকে নানাবিধ বস্ত্রে আচ্ছাদিত করিয়া রক্ষা করিলেন।

 তদ্দর্শনে সভামধ্যে ঘোরতর কলরব আরম্ভ হইল। মহীপালগণ দুঃশাসনকে ভর্ৎসনা করিয়া নিবারণ করিলেন। ভীমসেন আর বসিয়া থাকিতে পারিলেন না। তাঁহার ওষ্ঠাধর ক্রোধভরে বিস্ফুরিত হইতে লাগিল। তিনি করে কর নিষ্পেষণ করিয়া শপথপূর্ব্বক কহিলেন—

 হে ক্ষত্রিয়গণ, শ্রবণ কর! যদি আমি যুদ্ধে এই ভারতাধম কুলাঙ্গার দুঃশাসনের বক্ষোবিদীর্ণ করিয়া রুধির পান না করি, তবে আমি যেন পূর্ব্বপুরুষের গতি প্রাপ্ত না হই।

 দুঃশাসন দ্রৌপদীর বসন আকর্ষণে কৃতকার্য্য না হইয়া লজ্জিতভাবে সভামধ্যে উপবিষ্ট হইলেন। সভ্যগণ ধার্ত্তরাষ্ট্রগণকে ধিক্কার প্রদান করিতে লাগিলেন এবং সজ্জনগণ ধৃত-