রাষ্ট্রকে নিন্দা করিয়া পরিতাপ করিতে লাগিলেন। সভাস্থ সকলকে পাণ্ডবপক্ষে কথঞ্চিৎ উত্তেজিত দেখিয়া বিদুর উৎক্ষিপ্ত হস্তদ্বারা কোলাহল নিবারণপূর্ব্বক কহিতে লাগিলেন—
হে সভ্যগণ। এই নিরপরাধা পাঞ্চালীর প্রতি আর অধিক অত্যাচার হইবার পূর্ব্বে আপনারা তৎকৃত প্রশ্নের উত্তর প্রদানে বর্ত্তমান সমস্যার মীমাংসা করুন। যে স্থানে অধর্ম্ম আচরিত হইতেছে, সেখানে মৌন থাকিলেও পাপ স্পর্শ করে, অতএব দ্রোপদীকে পণ রাখিবার ক্ষমতা যুধিষ্ঠিরের ছিল কি না― ইহা সত্বর নির্দ্ধারণ করুন।
কিন্তু বাষ্পাকুললোচনা কৃষ্ণাকে নিরীক্ষণ করিয়াও ধৃতরাষ্ট্রের ভয়ে কেহ বাঙ্নিষ্পত্তি করিলেন না।
তখন দুর্য্যোধন দ্রৌপদীকে বলিতে লাগিলেন—
হে দ্রৌপদি! তুমি পতিগণকে তোমার প্রশ্নের উত্তর জিজ্ঞাসা কর। তাঁহারা যাহা বলিবেন, আমরা তাহাতে সম্মত আছি। যদি ভীম অর্জ্জুন নকুল সহদেব যুধিষ্ঠিরের প্রভুত্ব প্রকাশ্যে অস্বীকার করেন, তবে তুমি দাসীত্ব-শৃঙ্খল হইতে মুক্ত হইতে পারিবে।
পাণ্ডবভ্রাতাদিগকে নিরুত্তর দেখিয়া বিজয়ােৎফুল্ল দুর্য্যোধন দ্রৌপদীর প্রতি সহাস্যে দৃষ্টিপাত করিয়া রাম উরুতে হস্তস্থাপনপূর্ব্বক অপমানসূচক ইঙ্গিত করিলেন।
ইহাতে মহাক্রোধন ভীমসেন মদমত্ত কুঞ্জরের ন্যায় গর্জ্জন করিয়া পুনরায় প্রতিজ্ঞা করিলেন―