পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪]
কুরু পাণ্ডব
৬৫

 মহারাজ! বহু কষ্টে শান্তিসঞ্চার হইয়াছে, বারবার কুলক্ষয়কর বিবাদের সূত্রপাত করিবেন না।

 কিন্তু ভীরুস্বভাব পুত্রবৎসল মােহান্ধ ধৃতরাষ্ট্র সে কথায় কর্ণপাত করিলেন না। পুত্রদের ক্রূর অভদ্রোচিত ব্যবহারে একান্ত শোকনিমগ্না ধর্মপরায়ণা রাজমহিষী গান্ধারীও এ সংবাদে উদ্বিগ্ন হইয়া কহিলেন―

 মহারাজ! দুর্য্যোধনের জন্ম মুহুর্ত্তেই সকলে তাহাকে পরিত্যাগ করিতে বলিয়াছিল, তুমি তাহা কর নাই। তাহার বিষম ফল একবার দেখিলে; আবার তুমি কোন্ সাহসে এই কুলপাংশুল দুর্ব্বিনীত বালকের কথায় অনুমােদন করিতেছ? উহাকে তোমার আজ্ঞানুবর্ত্তী না করিতে পার, তবে পরিত্যাগ কর। সেতুবন্ধ হইলে তাহা ইচ্ছাপূর্ব্বক কে ভগ্ন করে? হে মহারাজ! পুত্রস্নেহবশত নির্ব্বাপিতপ্রায় অগ্নি প্রজ্জ্বলিত করিয়া কুলনাশের হেতু হইও না।

 ধৃতরাষ্ট্র বিষণ্ণবদনে উত্তর করিলেন―

 প্রিয়ে! যদি একান্ত বংশনাশ হয়, তবে আমি নিরুপায়। কিন্তু প্রাণপ্রিয় পুত্রের বিরুদ্ধাচরণে আমি সক্ষম নহি।

 পিতার অনুমতি প্রাপ্তিমাত্র দুর্য্যোধন যুধিষ্ঠিরের নিকটে উপস্থিত হইয়া কহিলেন—

 হে পার্থ। সভায় এখনও বহুসংখ্যক লােক উপস্থিত আছে। পিতার অনুমতি হইয়াছে যে, তোমরা বিদায় হইবার পূর্ব্বে আমরা আর একবার সকলে মিলিয়া ক্রীড়া করি।