পাতা:কৃষিতত্ত্ব - নীলকমল লাহিড়ী.pdf/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩২ কৃষিতত্ত্ব। তাহাতে খুব দাবিয়া লাঙ্গলা দিবে, অল্প ঘাস হইলে তদ্রুপ করা উচিত নয়। লাঙ্গল দিলে কতক ঘাস মৃত্তিকার নীচে পড়িয়া পচিয়া যায়, উপরে আলগা হইয়া উঠিলেও শুষ্ক হয়। উভয় প্রকারেই ধান্যের চারার পক্ষে হিত হয়। লাঙ্গলা দিবার পর ঘন ঘন বৃষ্টি হইলে চারা সকল বিনষ্ট হয়। লাঙ্গলা দিবার পাঁচ ছয় দিন পর আট দশ দিনের মধ্যে চারা সকল চোঁদ অথবা ষোল ইঞ্চির অধিক উচ্চ হইতে না হইতে আর একবার নিড়াইতে হয়। তদনন্তর বৃষ্টি হইলে যদি অধিক ঘাস উদগত হয়, তবে আর একবার নিড়াইতে পারিলে ভাল হয়, না পারিলেও বিশেষ ক্ষতি হয় না । জ্যৈষ্ঠ মাস হইতে আশু ধান্য পাকিতে আরম্ভ হয় । যখন যে ক্ষেত্রের ধান্য পঙ্ক হইবে তখন তাহা কৰ্ত্তন করিয়া পরিমাণমত স্থানে স্থানে পুঞ্জ করিয়া রাখিবো। তৎপর দুই তিন দিনের মধ্যে গোরু দ্বারা মর্দন করিয়া শস্য পৃথক করিয়া লইবে । মর্দন করিতে যতই বিলম্ব হইবে, ততই ধান্যের মন্দ অবস্থা হইবে। সেই মন্দ অবস্থাকে ধান্য ঘুলান বলে। ঘুলাইলে সেই ধান্যে অন্ধুর থাকে না এবং তণ্ডুল লাল রঙ্গ ও বিস্বাদ হয়। মর্দনের প্রণালী এই এক এক পুঞ্জের পলাল সহিত ধান্য প্ৰাঙ্গণে ছড়াইয়া চারিটি গোরু রজ্জ্ব দ্বারা পরস্পর যোজন করিয়া সেই ছড়ান ধান্যের উপর যুৱাইয়া ঘুরাইয়া চলাইবে, তাহাতে ধান্যসকল পলাল হইতে পৃথক হইবে, পরে ঝাড়িয়া বাতাস দিয়া লইয়া রৌদ্রে শুকাইয়া রাখিবে। এই ধান্য ভাল মত শুকাইয়া রাখিলে দশ বৎসরেরও অধিক রাখা যাইতে পারে। উত্তমরূপ কৃষিকাৰ্য্য করিলে এবং দৈব দুর্ঘটনাদি না হইলে এক বিঘা ভূমিতে অনুন পনর মণ ধান্য উৎপন্ন হয়। প্ৰথম চাসের পূর্ব মাঘ ফাস্তুন মাসে বৃষ্টি হইলে চাষের সুবিধা হয়। চারা হইলে পর বৈশাখ মাসে বৃষ্টি হইলেও ভাল কিন্তু ঘন ঘন বৃষ্টি ভাল নয়, মধ্যে মধ্যে দুই এক দিবস বৃষ্টি হইয়া পােচ সাত দিন রৌদ্র হইলে বিশেষ উপকার হয়। চৈত্র মাসে ঘন ঘন বৃষ্টি হইলে বিশেষ অনিষ্ট হয়। নিড়ােনাদি কাৰ্যের শেষ হওয়ার পর অর্থাৎ চারা বড় হইলে সমান্যতঃ জ্যৈষ্ঠ আষাঢ়াদিতে বৃষ্টি হইয়া ধান্যের গোড়ায় জল দাড়াইলে, ফল অধিক হয়। ধান্যের গাছ সমুদয় ডুবিয়া গেলে ভারি অনিষ্ট হয়। চারি পঁাচ দিনের মধ্যে জল কমিয়া গেলে