পাতা:কৃষ্ণকলি ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভবতোষ ঠাকুর

প্রাতঃকালীন ভক্তসমাগম কি রকম হয়েছে দেখবার জন্য জিতেন আর বিধু নীচে নেমে গেল।

 নিখিল বললেন, আচ্ছা ভবতোষ, তুমি তো বলতে যে কর্মযোগই শ্রেষ্ঠ যোগ, লোকসংগ্রহ অর্থাৎ লোকচরিত্রের উন্নতি সাধনই শ্রেষ্ঠ কর্ম। তবে এখন নির্জনে থাকতে চাচ্ছ কেন? শুধু নিজের মুক্তির জন্যে লুকিয়ে তপস্যা, আর নিজের পেট ভরাবার জন্যে লুকিয়ে খাওয়া, দুটোই তো স্বার্থপরতা।

 ভবতোষ। আমি অক্ষম দূর্বল, বক্তৃতা দিতে পারি না, ধর্মপ্রচার করতে পারি না, কীর্তন গাওয়া আসে না, লোকশিক্ষার পদ্ধতিও জানি না। বুদ্ধ যিশু শংকর চৈতন্য রামমোহন রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ গান্ধী—এঁদের শক্তির কণামাত্র আমার নেই, তাই শ‍ুধু, আত্মচিন্তা করি। কেউ যদি আমার কাছে কিছু জানতে চায় তো যথাবুদ্ধি বলি। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে, সত্য কথা শ‍ুনতে কেউ চায় না, সবাই স্বার্থসিদ্ধির সোজা উপায় বা অলৌকিক শক্তি খোঁজে।

 জিতেন ফিরে এসে বললে, ঠাকুর, আজ বেশী লোক আসে নি, সবাই ভোট দিতে গেছে কি না। চার পাঁচ জন লোক নীচে দর্শনের জন্যে অপেক্ষা করছে।

 নিখিল। কি রকম লোক জিতেনবাব?

 জিতেন। সেই গীতায় যেমন চতুর্বিধা ভজন্তে মাং আছে— আর্ত, জিজ্ঞাসু, অর্থার্থী, আর জ্ঞানী।

 ভবতোষ। জ্ঞানীদের চলে যেতে বল, তাদের যখন জ্ঞান

১৩৭