পাতা:কৃষ্ণকলি ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভবতোষ ঠাকুর

উপচার সাজানো রয়েছে, সন্দেশের ওপর পেস্তাটি পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে। তাঁদের দৃষ্টি বিগ্রহের দিকে নয়, আগন্তুকের দিকে। যেন বলছেন, সবাই দেখ গো, আমরা পূজো করছি। খোঁজ নিয়ে জানলাম, একটি ছবি গৃহস্বামীর স্ত্রীর, আর দুটি তাঁর স্বর্গতা মা আর ঠাকুমার। এদের পূজো একটা উপলক্ষ্য মাত্র, আসল উদ্দেশ্য আড়ম্বর, যেমন আজকালকার সর্বজনীন।

 ভবতোষ। সকলেই লোক দেখানো পূজো করে না। সুভদ্রার যদি নিজের আগ্রহ হয় তবে সে মন্ত্র নিয়ে পূজো করুক, কিংবা বিনা আড়ম্বরে উপাসনা করুক, কিন্তু তার জন্যে তাকে হ‍ুকুম করা চলবে না। হ‍ুজুক থেকেও তাকে বাঁচাতে হবে। কালক্রমে অনেকের নিষ্ঠা কমে যায়, তবু তারা চক্ষুলজ্জায় ঠাট বজায় রাখে। আমি একজনকে জানতুম, তিনি অহিংসার ব্রত নিয়ে নিরামিষাশী হয়েছিলেন। সাধুপুর‍ুষ বলে তাঁর খ্যাতি হল। কিন্তু তিনি লোভ দমন করতে পারেন নি, একদিন হোটেলে লুকিয়ে খেতে গিয়ে ধরা পড়ে গেলেন। নিখাকী মায়েরা বোধ হয় পুণ্যকর্ম ভেবেই উপবাস আরম্ভ করে, কিন্তু লোকের বাহবা শুনে শুনে তাদের কুবদ্ধি হয়, শেষটায় প্রতারণার আশ্রয় নেয়। ভক্তি বা নিষ্ঠার অভাব, সন্ধ্যাআহ্নিক পূজা-অর্চনা না করা, আমিষ ভোজন, কোনওটাই অপরাধ নয়। অনুষ্ঠানহীন নাস্তিকদের মধ্যেও সাধুপুর‍ুষ আছেন। যার ভাল লাগে, সে চিরজীবন একনিষ্ঠ হয়ে অনুষ্ঠান পালন করতে পারে। যদি ভাল না লাগে, তবে যেদিন খুশি

১৪৭