পাতা:কৃষ্ণকলি ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভবতোষ ঠাকুর

চেষ্টা কর, তোমার দুঃখ কমবে; সকলের সখে সুখী হও, তোমার সুখে বাড়বে।


জয় চলে গেল। একটু পরে নিখিল বিদায় নিলেন, তাঁর পিছনে জিতেন আর বিধুও নীচে নেমে এল।

 নিখিল বললেন, কি হল জিতেনবাবু, আপনারা বড্ড যেন মুষড়ে গেছেন মনে হচ্ছে।

 জিতেন। আরে ছি ছি, এমন করলে কি প্রতিষ্ঠা হয়, না মানুষের শ্রদ্ধা পাওয়া যায়? প্রেম, ভক্তি, ভগবানের লীলা এই সবের ব্যাখ্যান করতে হয়, কর্মফল জন্মান্তর পরলোকতত্ত্ব বোঝাতে হয়, কিছ; কিছু, বিভূতি আর দৈবশক্তি দেখাতে হয়, মিষ্টি মিষ্টি বচন বলতে হয়, তবে না ভক্তরা খুশী হবে! চেতলার গোলোক ঠাকুর সেদিন কি সুন্দর একটি কথা বললেন—‘মানুষ কিরকম জানিস? মাছির মা- আর ফানুষের -নুষ। তোরা মাছির মতন আঁস্তাকুড়ে ভনভন করবি, না ফানুষ হয়ে ওপরে উঠবি?’ কথাটি শুনে সবাই মোহিত হয়ে গেল। আর আমাদের ঠাকুরটির শ‍ুধু কটমটে আবোল-তাবোল বাক্যি, যেন জিওমেট্রি পড়াচ্ছেন। শ্রীপতি রায় ভীষণ রেগে গেছেন, ঠাকুর তাঁকে গ্রাহ্যই করলেন না। তিনি ধনী মানী লোক, ক্যাডিলাক গাড়িতে এসেছিলেন, তাঁর অপমান করা কি উচিত হয়েছে? আমরা যতই ঠাকুরকে উঁচুতে তোলবার চেষ্টা করছি ততই উনি নেমে যাচ্ছেন।

১৫১