হল। দেখাশোনার ভার অকলু খাঁর ওপর পড়ল। সে তার মনিবকে বললে, হুজুর, আমাদের যে বাঙালী ডাক্তারবাবু, আছেন তিনি বলেছেন আলীপুরের চিড়িয়াখানায় প্রত্যেক বাঘকে দু-তিন দিন অন্তর সাত সের ঘোড়ার মাংস খেতে দেওয়া হয়। এখানে তো তা মিলবে না, আপনি খাসীর হহুকুম করুন।
রঘুবীর বললেন, খবরদার, কোনও রকম গোশত আমার কোঠির এলাকায় ঢুকবে না। এই বাঘের নাম দিয়েছি রামখেলাওন, ও গোশত খাবে না।
—তবে কি রকম খানা দেওয়া হবে হুজুর?
—খানা কি কমী ক্যা? পুরি কচৌড়ি হালুআ লাড্ডু, খিলাও, চাহে দুধ পিলাও, রাবড়ি মালাই পেড়া বরফি ভি খিলাও।
ওই সব পবিত্র খাদ্যেরই ব্যবস্থা হল। রঘুবীর তাঁর লোকজনদের বিশ্বাস করলেন না, নাতিকে সঙ্গে নিয়ে নিজের সামনে বাঘকে খাওয়াতে এলেন। বাঘ একবার শুকে পিছন ফিরে বসল। রঘুবীর বললেন, এসব জিনিস খাওয়া তো অভ্যাস নেই, নিয়মিত দিয়ে যাও, দিন কতক পরেই খেতে শিখবে।
দু দিন অন্তর রামখেলাওনকে নৈবেদ্য সাজিয়ে দেওয়া হতে লাগল, কিন্তু একটু, দুধ আর মালাই ছাড়া সে কিছুই খায় না। পুরি কচৌড়ি পেড়া ইত্যাদি সবই অকলু খা ঁআর অন্যান্য চাকরদের জঠরে যেতে লাগল।