পাতা:কৃষ্ণকলি ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কৃষ্ণকলি

লাগল—পরদেসীয়া আওল আঙ্গানা। অকলু খা ঁকপাট টেনে নিয়ে নবদম্পতিকে এক খাঁচায় পুরে দিলে।

 ফ্রয়েডের শিষ্যরা যাই বলুন, প্রাণীর আদিম প্রেরণা ক্ষৎপিপাসা। রামখেলাওন আর রামপিয়ারী হিংস্র শ্বাপদ, নামের আগে রাম যোগ করে এবং অনেক দিন নিরামিষ খাইয়েও তাদের স্বভাব বদলানো যায় নি। চার চক্ষুর মিলন হবা মাত্র আমিষবুভুক্ষ, দুই প্রাণীর ক্যানিবাল প্রবৃত্তি চাগিয়ে উঠল, প্রচণ্ড গর্জন করে ঝাঁপিয়ে পড়ে তারা পরস্পরের সামনের বা ঁপায়ে কামড় দিয়ে এক এক গ্রাস মাংস তুলে নিলে।

 বাঘের গর্জন, রক্তের স্রোত, মাননুষের চিৎকার, লল্লুলালের কান্না সমস্ত মিলে সেই বিবাহসভায় হুলস্থূল পড়ে গেল। রঘুবীরের আদেশে অকুল খা ঁএকটা জ্বলন্ত মশালের খোঁচা দিয়ে কোনও রকমে বাঘ দুটোকে তফাত করে তাদের নিজের নিজের খাঁচায় পুরে দিলে। রামভরোস মহারাজ বললেন, এই দুই জীব পূর্বজন্মে বহু পাপ করেছিল তাই এই দশা হয়েছে, এদের চরিত্র দূরস্ত হতে আরও চুরাশি জন্ম লাগবে।

 রঘুবীর সিং জিজ্ঞাসা করলেন, ডাক্তারবাবু, এখন কি করা উচিত?

 কালীবাবু বললেন, চৌধুরীজী, আপনি তো চেষ্টার ত্রুটি করেন নি, এরা যখন কিছুতেই সাত্ত্বিক হল না তখন আর দেরি না করে এদের আলীপুর পাঠিয়ে দিন।

২৮