পাতা:কৃষ্ণকলি ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কৃষ্ণকলি

ভীষ্ম। পত্নীর সম্মতি পেয়ে রাখহরিবাবু দাঁড়িয়ে উঠে স্মিতমুখে বললেন, সভাপতি ভায়া, মাননীয় মহিলা ও ভদ্রবৃন্দ, মা-লক্ষ্মীগণ, এবং দিদিমণিগণ, আমার ওপর আপনারা বড় কঠিন কর্তব্য চাপিয়েছেন। কিন্তু আমি পিছপা নই, এর চাইতেও শক্ত কাজ ঢের করেছি। গোড়াতেই আমি বরনারীর লক্ষণ সম্বন্ধে দু-চার কথা বলতে চাই। ইংরেজীতে প্রবাদ আছে—beauty is skin deep, অর্থাৎ রূপের দৌড় চামড়া পর্যন্ত। কথাটা ডাহা মিথ্যে। শব্দ চামড়ায় নয়, নারীর মাংস হাড় মজ্জা সর্বত্রই রূপের সন্ধান করতে হবে।

 একটা ফাজিল মেয়ে বললে, চিরে চিরে দেখবেন নাকি সার?

 —আরে না না, তোমাদের কোনও ভয় নেই, আমি এক নজরেই ভেতর বার সব টের পাই। যা বলছিলাম শোন। মানুষের যেমন তিন দশা —বাল্য যৌবন জরা, নারীর যৌবনেরও তেমনি তিন দশা—আদ্য মধ্য আর অন্ত্য। এই তিন যৌবনের তোয়াজ বা পরিচর্যার পদ্ধতি আলাদা, প্রসাধন বা মেরামতও এক রকমে হয় না। কি রকম জানেন? মনে কর‍ুন একটা ইমারত তৈরী হল। প্রথম পনরো বৎসর তার হেপাজত খুব সোজা, মাঝে মাঝে চুনকাম আর রং ফেরালেই যথেষ্ট। কিন্তু আরও পরে দেখবেন, এক এক জায়গায় পলেস্তারা খসে গেছে, দরজা জানালার রং চটে গেছে। তখন রীতিমত মেরামত করতে হবে। ত্রিশ-চল্লিশ বছর পরে দেখবেন, স্থানে

৪২