পাতা:কৃষ্ণকলি ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বরনারীবরণ

স্থানে ভিত বসে গেছে, দেওয়ালে ফাট ধরেছে, ছাত চিড় খেয়েছে। তখন শুধু, দাগরাজি নয়, থরো রিপেয়ার দরকার, হয়তো দু-চার জায়গায় পিলপে গেঁথে কড়িতে চাড় দিতে হবে, ফাটা দেওয়াল জুড়তে হবে। ফেস লিফ‍্টিং জানেন? বিলেতে খুব চলন আছে, আমাদের মা-লক্ষ্মীরা কেউ করিয়েছেন কিনা জানি না। বেশী বয়সে গাল ঝুলে পড়লে রগের চামড়া টেনে সেলাই করে দেয়, তাতে যৌবনশ্রী ফিরে আসে। ফাটা দেওয়াল যেমন লোহার প্লেট আর নট-বোল্ট, দিয়ে টেনে রাখা হয় সেইরকম আর কি। আসল কথা, আমাদের এই দেহমন্দির একটা ইমারতের সমান, যতদিন খাড়া থাকে ততদিনই তার তোয়াজ করতে হয়। কিন্তু ইমারত পুরনো হলেই বরবাদ হয় না, হাল ফ্যাশনের অনেক বাড়ির চাইতে আমাদের বাপপিতামোর আমলের সেকেলে বাড়ি ঢের ভাল। বরনারীও সেইরকমে বিচার করতে হবে। শুধু কম বয়স আর ওপরচটকে ভুললে চলবে না মশাই, দেখতে হবে বনেদ কেমন, গাঁথনি কেমন, ভূমিকম্প আর ঝড়বৃষ্টির ধকল সইতে পেরেছে কিনা। আচ্ছা, কথা তো বিস্তর বলা হল, এখন ইন্‌স্পেকশন আরম্ভ করা যাক। কই হে সেক্রেটারি, তোমাদের বরমাল্য কই?

 কপোত গ‍ুহ একটি প্রকাণ্ড মালা এনে বললেন, এই যে সার। রাখহরিবাবু মালাটি হাতে নিয়ে বললেন, বাঃ, খাসা মালাটি, বোধ হয় সের খানিক জুঁই ফল আছে। বরমাল্য এইরকমই হওয়া উচিত। আজকাল হয়েছে গ্যালভানাইজ তারে

৪৩