পাতা:কৃষ্ণকলি ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
একগুঁয়ে বার্থা

বার্থা গাড়ি কাত হয়ে পড়ে গেল। ইন্দ্রপ্রতাপের ইচ্ছে ছিল তাড়াতাড়ি অকুস্থল থেকে দূরে সরে পড়বেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গিনী হেলেনা চিৎকার করতে লাগলেন, দৈবক্রমে একটা মোটর গাড়িও বিপরীত দিক থেকে এসে পড়ল। তাতে ছিলেন ফরেস্ট অফিসার বনবিহারী দুবে আর তাঁর চাপরাসী।

 অগত্যা ইন্দ্রপ্রতাপকে থামতে হল। তিনি দবের সাহায্যে জলদ রায়কে তুলে নিয়ে চাণ্ডিল হাতপাতালে এলেন। ডাক্তার বললেম, সাংঘাতিক জখম, আমি মরফীন ইঞ্জেকশন দিচ্ছি, এখনই কলকাতায় নিয়ে যান। দুবেজী বললেন, কুমার সাহেব, আপনি আর দেরি করবেন না, এঁদের নিয়ে এখনই বেরিয়ে পড়ুন। আপনার বন্ধুর গাড়িটা আমি পাঠাবার ব্যবস্থা করছি। চেক বই সঙ্গে আছে তো? একখানা সাড়ে সাত হাজার টাকার বেয়ারার চেক লিখে দিন, পুলিসকে ঠাণ্ডা করতে হবে।

 কলকাতায় ফেরবার সাত দিন পরেই জলদ রায় মারা পড়লেন, তাঁর স্ত্রী হেলেনা উন্মাদ অবস্থায় বাপের বাড়ি চলে গেলেন। তোবড়ানো বার্থা গাড়িটা জগুমল কিনে নিলে।

 এখন ব্যাপারটা আপনাদের কাছে পরিষ্কার হল তো? ইন্দ্রপ্রতাপ বার্থাকে জখম করেছে, তার প্রিয় মনিবকে খুন করেছে, বার্থা এরই প্রতিশোধ খুঁজছিল। অবশেষে আমার হাতে এসে তার মনস্কামনা পূর্ণ হল, স্টক এক্সচেঞ্জের কাছে সোআংক‍্-টুটুলারকে ধাক্কা দিয়ে চুরমার করে দিলে, ইন্দ্রপ্রতাপকেও মারলে।

৫৭