পাতা:কৃষ্ণকলি ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চপ্রিয়া পাঞ্চালী

 প্রায় চার মাস হল পাণ্ডবরা বনবাসে আছেন। এ পর্যন্ত যুধিষ্ঠির প্রসন্ন মনে দিনযাপন করছিলেন, যেন বনবাসেই তিনি আজীবন অভ্যস্ত। ভীম প্রথম প্রথম কিছু, অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন, কিন্তু পরে বেশ প্রফল্ল হয়ে মৃগয়া নিয়েই থাকতেন। অর্জুন নকুল সহদেবও রাজ্যনাশের দুঃখ ভুলে গিয়েছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি পাঞ্চালীর ভাবান্তর দেখে পাঁচজনেই উদ্‌বিগ্ন হয়েছেন।

 দ্যূতসভায় অপমান আর রাজ্যনাশের দুঃখ দ্রৌপদী ভুলতে পারেন নি। তিনি প্রায়ই বিলাপ করতেন যে তাঁর জ্যেষ্ঠ পতির নির্বুদ্ধিতা এবং অন্যান্য পতির অকর্মণ্যতার জন্যই এই দুর্দশায় পড়তে হয়েছে। যুধিষ্ঠির তাঁকে শান্ত করবার জন্য অনেক চেষ্টা করেছেন, ভীম বার বার আশ্বাস দিয়েছেন যে দুঃশাসনের রক্তপান আর দুর্যোধনের ঊরুভঙ্গ না করে তিনি ছাড়বেন না, অর্জুন নকুল সহদেবও তাঁকে বহ‍ুবার বলেছেন যে ত্রয়োদশ বর্ষ দেখতে দেখতে কেটে যাবে, তার পর আবার সুদিন আসবে। কিন্তু কোনও ফল হয় নি, দ্রৌপদী তাঁর রোষ দমন করতে না পেরে অবশেষে পঞ্চপাণ্ডবের সঙ্গে কথা বন্ধ করেছেন।

দ্বৈতবন থেকে দ্বারকা বহু দূর, তথাপি কৃষ্ণ রথে চড়ে মাঝে মাঝে পাণ্ডবদের দেখতে আসেন, দু-একবার সত্যভামাকেও সঙ্গে এনেছেন। এবারে তিনি একাই এসেছেন।

৬১