পাতা:কৃষ্ণকলি ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চপ্রিয়া পাঞ্চালী

পুক্কশ প্রভৃতি প্রত্যন্তবাসীরা কিছু, যব আর মধু এনে দেয়। মৃগয়ালব্ধ পশ‍ুর মাংস এবং স্বচ্ছন্দবনজাত ফল মূল ও শাকই পাণ্ডবগণের প্রধান খাদ্য।

 প্রত্যহ প্রাতঃকৃত্য সমাপন করেই পঞ্চপাণ্ডব মতৃগয়ায় নির্গত হন। আজ একটি বৃহৎ বরাহ দেখে তাঁরা উৎফুল্ল হলেন, কারণ বরাহমাংস তাঁদের আশ্রিত বিপ্রগণের অতিশয় প্রিয়। অর্জুন শরাঘাত করলেন, কিন্তু বিদ্ধ হয়েও বরাহ মরল না, বেগে ধাবিত হয়ে নিবিড় অরণ্যে গেল। তখন পঞ্চপাণ্ডব সকলেই শরমোচন করলেন। সঙ্গে সঙ্গে নারীকণ্ঠে আর্তনাদ উঠল—হা নাথ, হতোঽস্মি!

 তাঁদের শরাঘাতে কি শ্রীহত্যা হল? পাণ্ডবগণ ব্যাকুল হয়ে অরণ্যে প্রবেশ করে দেখলেন, বরাহ গতপ্রাণ হয়ে পড়ে আছে কিন্তু আর কেউ নেই। চতুর্দিকে অন্বেষণ করেও তাঁরা কিছু দেখতে পেলেন না। ভীম বললেন, নিশ্চয় রাক্ষসী মায়া, মারীচ এইপ্রকার চিৎকার করে শ্রীরামকে বিভ্রান্ত করেছিল।

 যুধিষ্ঠির শঙ্কিত হয়ে বললেন, আশ্রমে শীঘ্র ফিরে চল, জানি না কোনও বিপদ হল কিনা। ভীম, তুমি বরাহটাকে কাঁধে নাও।

 সকলে আশ্রমে এসে দেখলেন কোনও বিপদ ঘটে নি। পাঞ্চালী সূর্যদত্ত তাম্রস্থালীতে বরাহমাংস পাক করলেন, সকলেই প্রচুর পরিমাণে ভোজন করে পরিতৃপ্ত হলেন।

৬৯