পাতা:কৃষ্ণকলি ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চপ্রিয়া পাঞ্চালী

 কৃষ্ণ সহাস্যে বললেন, ঋষিপত্নীহত্যা হয় নি। অপ্সরা পঞ্চচূড়া ঠিক তাঁর পত্নী নন, সেবাদাসী বলা যেতে পারে। বরাহ তাঁকে ঈষৎ দন্তাঘাত করেছিল, তিনি ভয়ে চিৎকার করে আশ্রমে পালিয়ে গিয়ে মূর্ছিত হয়েছিলেন। জ্বলজ্জট তাঁকে দেখে ভেবেছিলেন বুঝি মরে গেছেন। পাণ্ডবদের মুক্তিলাভের পর আমি ঋষির সঙ্গে তাঁর আশ্রমে গিয়ে দেখলাম পঞ্চচূড়া দোলনায় দুলছেন।

 দ্রৌপদী বললেন, কৃষ্ণ, এখনই আমাকে পতিগণের সকাশে নিয়ে চল। হা, আমি অপরাধিনী, এক মাস তাঁদের উপেক্ষা করেছি, এখন কোন্ বাক্যে ক্ষমাভিক্ষা করব?

 — পাঞ্চালী, ক্ষমা চেয়ে অনর্থক তাঁদের বিব্রত ক’রো না, তাঁরা তো তোমার উপর অপ্রসন্ন হন নি। বহুদিন পরে তোমার সম্ভাষণ শোনবার জন্য তাঁরা তৃষিত চাতকের ন্যায় উদ্গ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছেন।

 —গোবিন্দ, আমি তাঁদের কি বলব?

 — পুরুষজাতি ভার্যার মুখে নিজের স্তুতি শ‍ুনলে যেমন পরিতৃপ্ত হয় তেমন আর কিছুতে হয় না। কৃষ্ণা, তুমি পঞ্চপাণ্ডবের কাছে গিয়ে তাঁদের স্তুতি কর।

 — হা কৃষ্ণ, আমি তাঁদের গঞ্জনাই দিয়েছি, এই দগ্ধ মুখে স্তুতি আসবে কেন? কি বলব তুমিই শিখিয়ে দাও।

 —সখী কৃষ্ণা, বাগ্‌দেবী তোমার রসনায় অধিষ্ঠান করবেন, তুমি আজ সর্বসমক্ষে অসংকোচে তাঁদের সংবর্ধনা কর। এখন

৭৫