— আচ্ছা। ধরুন ত্রিশ বছরের সুপুরুষ গুরু আর বিশ বছরের সুশ্রী শিষ্যা। এমন ক্ষেত্রে মামুলী প্রেম আকছার হয়ে থাকে। কিন্তু মনে করুন গুরু খুব কদাকার, অথচ তার সুশ্রী স্ত্রী আছে। শিষ্যাও খুব কুৎসিত, তারও সুশ্রী স্বামী আছে। গুরু আর শিষ্যার মধ্যে মামুলী প্রেম হল না, কিন্তু ভক্তি আর স্নেহ খুব হল। একে প্লেটনিক বলবেন তো?
পিনাকী সর্বজ্ঞ রেগে গিয়ে বললেন, যাও, তোমার সঙ্গে কথা কইতে চাই না। বিষয়টি তলিয়ে বোঝবার ইচ্ছে নেই, শুধু জেঠামি।
মাথা চুলকে উপেন দত্ত বললে, আজ্ঞে না, আমি শুধু একটা ভাল ডেফিনিশন খুঁজছি।
ললিত সাণ্ডেল বললে, ওহে উপেন, আমি খুব সোজা করে বলছি শোন। প্লেটনিক প্রেম মানে আলগোছে প্রেম, যেমন শ্রীকান্ত-রাজলক্ষ্মীর সম্পর্ক। আচ্ছা যতীশ-দা, তুমি তো একজন মস্ত সাহিত্যিক, খুব পড়াশানোও করেছ। তুমিই বুঝিয়ে দাও না প্লেটনিক প্রেম জিনিসটি কি?
যতীশ মিত্তির বললে, সব জিনিস কি বোঝানো যায়? যেমন ব্রহ্ম তিনি তো বাক্য আর মনের অগোচর। ধর্ম, সৌন্দর্য, রস, আর্ট—এসবও স্পষ্ট কবে বোঝানো যায় না। লাল রং, মিষ্টি স্বাদ, আঁষটে গন্ধ—এসবও অনির্বচনীয়, বুঝিয়ে বলা অসম্ভব, শুধু দৃষ্টান্ত দেওয়া চলে। প্রেমও সেই রকম।
৮২