পাতা:কৃষ্ণকান্তের উইল-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৃষ্ণকান্তের উইল & مده ভ্রমর কাদিয়া বলিল, “একবার দেখা দিদি । ইহজন্মে আর একবার দেখি ! এই সময়ে আর একবার দেখা ” - যামিনী উঠিয়া গেল। আল্লক্ষণ পরে, নিঃশব্দপাদবিক্ষেপে গোবিন্দলাল—সাত বৎসরের পর নিজ শয্যাগৃহে প্রবেশ করিলেন। দুজনেই কাদিতেছিল । এক জনও কথা কহিতে পারিল না। ভ্রমর, স্বামীকে কাছে আসিয়া লিষ্ঠান।য বসিতে ইঙ্গিত করিল।–গোবিন্দলাল কাদিতে কাদিতে বিছানায় বসিল। ভ্রমর তাহাকে আরও কাছে আসিতে বলিল,—গোবিন্দলাল আরও কাছে গেল। তখন ভ্রমর আপন করতলের নিকট স্বামীর চরণ পাইয়া, সেই চরণযুগল স্পর্শ করিয়া পদরেণু লইয়া মাথায় দিল। বলিল, “আজ আমার সকল অপরাধ মার্জনা করিয়া, আশীৰ্ব্বাদ করিও জন্মান্তরে যেন মুখী হই ।” গোবিন্দলাল কোন কথা কহিতে পারিলেন না। ভ্রমরের হাত, আপন হাতে তুলিয়া লইলেন। সেইরূপ হাতে হাত রহিল। অনেকক্ষণ রহিল। ভ্রমর নিঃশব্দে প্রাণত্যাগ করিল । , - * ..., পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ ভ্রমর মরিয়া গেল। যথারীতি তাহার সৎকার হইল। সৎকার করিয়া আসিয়া গোবিন্দলাল গৃহে বসিলেন । গৃহে প্রত্যাবর্তন করিয়া অবধি, তিনি কাহারও সহিত কথা কহেন নাই । * W আবার রজনী পোহাইল। ভ্রমরের মৃত্যুর পরদিন, যেমন সূৰ্য্য প্রত্যহ উঠিয়া থাকে, তেমনি উঠিল। গাছের পাতা ছায়ালোকে উজ্জল হইল।—সরোবরে কৃষ্ণবারি ক্ষুত্র বীচি বিক্ষেপ করিয়া জ্বলিতে লাগিল ; আকাশের কালো মেঘ শাদা হইল-ভ্রমর যেন মরে নাই । গোবিন্দলাল বাহির হইলেম । - গোবিন্দলাল জুই জন স্ত্রীলোককে ভাল বাসিয়াছিলেন— প্রমরকে আর রোহিণীকে । রোহিণী মরিল--ভ্রমর মরিল। রোহিণীর রূপে আকৃষ্ট হইয়াছিলেন—যৌবনের অতৃপ্ত রূপতৃষ্ণ শান্ত করিতে পারেন নাই । ভ্রমরকে ত্যাগ করিয়া রোহিণীকে গ্রহণ করিলেন। রোহিণীকে গ্রহণ করিয়াই জানিয়াছিলেন যে, এ রোহিণী, ভ্রমর নহে-এ রূপতৃষ্ণ, এ স্নেহ