পাতা:কৃষ্ণকান্তের উইল-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

४२ কৃষ্ণকান্তের উইল পোষ্ট । হঁ—প্রায় অনেক চিঠিই রেজিষ্টরি করা মা। কোন আপিস হইতে রেজিষ্টরি হইয়া আইসে ? পোষ্ট । মনে নাই। - মাধবী। তোমার আপিসে একখানা করিয়া রসিদ থাকে না ? পোষ্ট মাষ্টার রসিদ খুজিয়া বাহির করিলেন। একখানি পড়িয়া বলিলেন, “প্রসাদপুর।” 输 - “প্রসাদপুর কোন জেলা ? তোমাদের লিষ্টি দেখ।” পোষ্ট্র মাষ্টার কঁাপিতে কঁাপিতে ছাপান লিষ্টি দেখিয়া বলিল, “যশোর ” ম। দেখ, তবে আর কোথা কোথা হইতে রেজিষ্টরি চিঠি উহার নামে আসিয়াছে। সব রসিদ দেখ। পোষ্ট বাবু দেখিলেন, ইদানীন্তন যত পত্র আসিয়াছে, সকলই প্রসাদপুর হইতে । মাধবীনাথ পোষ্ট মাষ্টার বাবুর কম্পমান হস্তে একখানি দশ টাকার নোট দিয়া বিদায় গ্রহণ করিলেন। তখনও হরিদাস বাবাজির হুক জুটিয়া উঠে নাই। মাধবীনাথ হরিদাসের জন্যও একটি টাকা রাখিয়া গেলেন। বলা বাহুল্য যে, পোষ্ট বাবু তাহা আত্মসাৎ করিলেন । চতুর্থ পরিচ্ছেদ মাধবীনাথ হাসিতে হাসিতে ফিরিয়া আসিলেন । মাধবীনাথ, গোবিন্দলাল ও রোহিণীর অধঃপতনকাহিনী সকলই লোকপরম্পরায় শুনিয়াছিলেন । তিনি মনে মনে স্থিরসিদ্ধান্ত করিয়াছিলেন যে, রোহিণী গোবিন্দলাল এক স্থানেই গোপনে বাস করিতেছে। ব্রহ্মানন্দের অবস্থাও তিনি সবিশেষ অবগত ছিলেন–জানিতেন যে রোহিণী ভিন্ন তাহার আর কেহই নাই । অতএব যখন পোষ্ট আপিসে জানিলেন যে, ব্রহ্মানন্দের নামে মাসে মাসে রেজিষ্টরি হইয়া চিঠি আসিতেছে—তখন বুঝিলেন যে, হয় রোহিণী, নয় গোবিন্দলাল তাহাকে মাসে মাসে খরচ পাঠায়। প্রসাদপুর হইতে চিঠি আসে, অতএব উভয়েই প্রসাদপুরে কিস্থা তাহার নিকটবৰ্ত্তী কোন স্থানে অবশ্য বাস করিতেছে, কিন্তু নিশ্চয়কে নিশ্চয়তর করিবার জন্য তিনি কন্যালয়ে প্রত্যাগমন করিয়াই ফঁাড়িতে একটি লোক পাঠাইলেন। সব ইনস্পেক্টরকে লিখিয়া পাঠাইলেন, একটি কন্‌ষ্টেবল পাঠাইবেন, বোধ হয় কতকগুলি চোর মাল ধরাইয়া দিতে পারিব ।