পাতা:কৈসার-অন্তঃপুর রহস্য - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SO কৈসার-অন্তঃপুর রহস্য কিন্তু , তাহদের সকলকে আহারের সময় এক বোতল মাত্র “বিয়ার” দেওয়া হইত। ভূত্যেরা তাহা না লইয়া ঘরের কড়ি দিয়া সুরাপান করিবার অনুমতি চাহিল। তাহারা সান্ধ্য-ভোজের সময় শূকর মাংস ও কিছু গোল আলুর ব্যঞ্জন পাইত ; কিন্তু ইহা তাহারা আহারে অসম্মত হইলে তাহাদের বলা হইল, “সম্রাট-মহিষী এ জিনিস এত ভালবাসেন, আর তোমাদের পছন্দ হয় না ?”-এ কথা শুনিয়া তাহারা যে উত্তর দিয়াছিল, তাহাতে অবজ্ঞা ও বিদ্রোপের আভাস ছিল। ইহাতে হের ভন লাইবেনে অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হইয়া কাহাদিগকে তিরস্কার করিয়াছিলেন ; বলিয়াছিলেন, “তোদের মত পেটুক বেয়াদব চাকর আর কোথাও দেখি নাই।”-কৈসারের প্রাসাদে অতিথিসৎকারের ব্যবস্থা কিরূপ, এই দৃষ্টান্ত হইতেই তাহা বুঝিতে পারা যায়। যাহা হউক, লাইবেনে কৈসারিণকেও পেটুক ভৃত্যদের বিশ্বগ্রাসী ক্ষুধার কথা বলিতে কুষ্ঠিত হন নাই। তিনি মহিষীকে বলিয়াছিলেন, “ইহারা যদি আর এক সপ্তাহ এখানে থাকে, তাহা হইলে আমাদের চাকর-বাকারগুলা পৰ্যন্ত ইহাদের দৃষ্টান্তে বেয়াদপি হইয়া উঠিবে। আর উহাদের মত রাক্ষসের পেট ভরাই, এত টাকাই বা কোথায় ? আপনি ক্ষমা করিবেন, কিন্তু আমাকে দায়ে পড়িয়া এরূপ কঠোর মন্তব্য প্ৰকাশ করিতে হইল।”-যুবরাজের ভৃত্যগণ ক্ষুধার তাড়নায় কৈসার-অন্তঃপুরের দরজা। জানালাগুলা পৰ্য্যন্ত গ্ৰাস করিতে উদ্যত হইয়াছিল কি না প্ৰকাশ নাই। প্ৰাসাদে কাপণ্যের পরিচয় এইরূপ অনেক আছে। কৈসারের পুত্ৰগণ দশম বর্ষে পদার্পণ করিলে তাহাদিগের প্রত্যেককে কিছু কিছু মাসিক বৃত্তি দানের ব্যবস্থা আছে। ঐ বৃত্তির পরিমাণ এক একটি লেফটেনাণ্টের বেতনের অধিক নহে। এই বৃত্তি হইতেই তাহাদিগকে, স্ব-স্ব ভৃত্যগণের বেতন প্ৰদান করিতে হয়।