পাতা:কৈসার-অন্তঃপুর রহস্য - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূমিকা। যে পৃথিবী-ব্যাপী মহা-সমরে ইউরোপে বিপুল জনক্ষয় আরম্ভ হইয়াছে, তাহা প্ৰলয়ের সুচনা কি না কে বলিবে ? ইউরোপের দেশে দেশে, সাগর উপসাগরে, পুলিনে কান্তারে ;-এসিয়া মহাদেশের হৃৎপিণ্ড সন্নিধানে, মোসলেম-শাসিত তুরস্কের তোরণোপকণ্ঠে, আফ্রিকার মরুপ্ৰান্তরে ;-আর দিগন্তব্যাপী সুনীল নীরনিধির সুবিমল তরল বক্ষ বিদীর্ণ করিয়া ও আকাশের ইন্দ্ৰিয়াতীত ঈযর-তরঙ্গ আলোড়িত করিয়া জলে স্থলে বোম-পথে যুগপৎ শত বৰ্জনাদের ন্যায় নিরবধি যে কামান-গৰ্জন সমুখিত হইতেছে, তাহা এসিয়ার শান্তিময় তপোবন--আধ্যাত্ম-চিন্তার পূণ্যতীর্থ ভারতবর্ষের কর্ণমূলে বিধাতার অমোঘ অভিসম্পাত বাণীর ন্যায় প্ৰতিধ্বনিত হইতেছে। আত্মরক্ষায় অসমর্থ, রাজশক্তির প্রতি একান্ত নির্ভরপরায়ণ, রাজভক্ত ভারতীয় প্ৰজামণ্ডলী মহিমান্বিত ভারত সম্রাটের বিজয় কামনায়, রাষ্ট্ৰীয় অমঙ্গল ও অরাজকতার কবল হইতে মুক্ত থাকিবার আশায়, প্রতিদিন বিপদভঞ্জন মধুসূদনের নাম স্মরণ করিতেছে। জৰ্ম্মান সম্রাট কৈসার দ্বিতীয় উইলিয়াম বৰ্ত্তমান মহা-সমরের সর্বপ্ৰধান উপলক্ষ্য । হয় ত বিধাতার অপ্ৰতিহত বিধানে লালসা-প্ৰদীপ্ত, ধনগৰ্ব্ব-স্ফীত, বিলাস-বাসনা-জর্জিরিত ইউরোপের এই ভীষণ সৰ্ব্বনাশ আরম্ভ হইয়াছে; কিন্তু এজন্য আজ সমগ্ৰ পৃথিবী একবাক্যে জৰ্ম্মান । সম্রাটকেই দায়ী করিতেছে। তঁহার অসংযত পররাজ্য-গ্রাস-লিপসা, শোণিত-রঞ্জিত গৌরব-মুকুট লাভের ইচ্ছা, সভ্যতা ও স্বাধীনতার লীলাক্ষেত্র সমগ্ৰ ইউরোপকে পদানত করিয়া জৰ্ম্মান ভাব-প্রবাহে প্লাবিত করিবার দুরাকাঙ্ক্ষা তাহাকে এই ধন-জন-ক্ষয়কর শান্তি-কল্যাণ-বিধ্বংসী মহা-সমরের অনুষ্ঠানে প্ৰবৃত্ত করিয়াছে। বর্তমান যুদ্ধের অবসানে