পাতা:কৈসার-অন্তঃপুর রহস্য - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

y& কৈসার-অন্তঃপুর রহস্য মহিষী যখন সম্রাটের সঙ্গে মৃগয়া করিতে যান, তখন দুইজন এডজুটাণ্ট, একজন কোর্ট মাসল, একজন সহচরী, ও একজন ‘কামার হের’ অর্থাৎ সন্ত্রান্ত খানসামা ও ডাক্তার তাহদের সঙ্গে থাকেন। অনেক দিন পূর্বে একবার মহিষী সম্রাটের সঙ্গে মৃগয়া করিতে গিয়াছিলেন।--তখন সন্ধ্যাকাল। তঁহাদের বিশ্বাস ছিল, তাহারা মৃগয়াক্ষেত্রে উপস্থিত হইয়াই শিকারের সন্ধান পাইবেন ; তঁহাদিগকে অকৃত কাৰ্য্য হইয়া ফিরিতে হইবে না । এই দিন সম্রাট শিকারীর বেশে গিয়াছিলেন, কিন্তু মহিষী রূপালি পাড়বিশিষ্ট একটি সাদা পোষাকে গিয়াছিলেন। সন্ধ্যার পর চন্দ্ৰোদয় হইলেও চন্দ্র তখন মেঘাবৃত ; মৃদুমন্দ বাতাস বহিতেছিল । সম্রাট ও মহিষী অরণ্যে প্ৰবেশ করিয়া দুই একটি মুগের সন্ধান পাইলেন বটে, কিন্তু তাহারা তাহাদিগকে প্ৰলুদ্ধ করিয়া গভীরতর অরণ্যে পলায়ন করিতে লাগিল। সম্রাট তিন ঘণ্টা কাল মৃগযুথের অনুসরণ করিয়া ক্লান্ত হইলেন ; অবশেষে তিনি একখানি গাড়ীতে উঠিলেন। সেই সময় একজন বৃদ্ধ অরণ্য-রক্ষক সবিস্ময়ে মহিষীর দিকে চাহিতে লাগিল । তাহার দৃষ্টিতে কিঞ্চিৎ অসৌজন্য প্ৰকাশিত হইয়াছিল। সম্রাট ইহা লক্ষ্য করিয়া রূঢ় স্বরে বলিলেন, “তুই কি দেখিতেছিস্ ? আজ একটা মৃগও আমাদের বন্দুকের গুলির “পাল্লার” মধ্যে আসিল না কেন, বলিতে পারিস বুড়া ?” বৃদ্ধ অরণ্য-রক্ষক বলিল, “পারি, হুজুর। এ কথার জবাব দেওয়া ভারি সোজা। সাদা কাপড় দেখিলে এই জানোয়ারগুলা যে ভয় পায়,-তাহা ত মহামুখেরাও জানে।” কৈসার এই কথা শুনিয়া এতই আনন্দ বোধ করিলেন যে, বৃদ্ধ অরণ্য-রক্ষকের রূঢ়তা তৎক্ষণাৎ মার্জনা করিয়া, কৌতুক ভরে