পাতা:কোন পথে? - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sobr কোন পথে ? প্ৰায় অন্ধবিশ্বাসে দাড়িয়ে যায়। এইরকম অবস্থায় একমাত্র এই নেতারাই কনস্টিটিউয়েন্ট এসেমব্লিার আলাপ-আলোচনাকে প্রভাবিত ও নিয়ন্ত্রিত করতে পারেন এবং তখনই দুষ্কৃতকারীদের বা প্ৰতিক্রিয়াশীলদের পক্ষে ওই সংস্থার উদ্দেশ্যকে পণ্ড করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। কংগ্রেস যে রকম চাইছে সেইমত কনস্টিটিউয়েন্ট এসেমব্লি গঠিত হলে সুনিশ্চিতভাবে তা নানারকম ষড়যন্ত্র ও ছলচাতুরির ঘাটিতে পরিণত হবে । এমন কোন ব্যক্তি বা সংগঠন থাকবে কিনা যথেষ্ট সন্দেহ আছে, যা এখানকার আলাপ-আলোচনাকে নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত করার মত যথেষ্ট প্রভাব ও মর্যাদার অধিকারী । কংগ্ৰেসকর্মীদের নিজেদের কথা বলতে গেলে, আজকের কংগ্রেস সংগঠন দক্ষিণপন্থীদের করায়ত্ত, বামপন্থীদের তুলনায় তঁরাই বিপুল সংখ্যায় নির্বাচিত হবেন। কপালগুণে যদি কোন মীমাংসায় পৌছনো যায় তাহলে মতৈক্যের ব্যাপকতম অংশটি সবচেয়ে প্ৰগতিশীল অভিমত দ্বারা নিৰ্ণীত হবে না, নিৰ্ণীত হবে সবচেয়ে মধ্যপন্থী অভিমত দ্বারা । অতএব, সব দিক থেকে বিবেচনা করে দেখলে, মেকী কনস্টিটিউয়েণ্ট এসেমব্লির দাবিকে অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করা উচিত । এই আলোচনা প্রসঙ্গে আমাদের একটি দৃশ্যের কথা মনে পড়ছে। দৃশ্যটি ১৯১৭ সালের বিপ্লবের পর রাশিয়ায় কনস্টিটিউয়েণ্ট এসেমন্ত্রি যখন মিলিত হয় তখনকার । বিরাট এক সমাবেশ, জারতন্ত্রী শাসনের বিরুদ্ধে সবরকম মতের লোক সেখানে রয়েছে। সবচেয়ে প্ৰগতিশীল দলের বলশেভিকরা সেখানে সংখ্যায় নগণ্য। নানা মত ও পথের ওই এসেমব্লি কেরেনস্কি-মার্ক পেশাদার বক্তা ও ফঁাকা বুলির বিপ্লববাদীদের দ্বারা বেশি প্রভাবিত হচ্ছিল। বলশেভিকরা এইসব দেখে স্থির বুঝল যে এতে কোনই ফল হবে না । তারা তখন এসেমব্লি থেকে বেরিয়ে এসে তা ভেঙে দেবার আদেশ জারি করল। তার পরে যা হয়েছে তা এখন ইতিহাসে পৰ্যবসিত । কনস্টিটিউয়েণ্ট এসেমব্লির মৃত্যু ঘটল কিন্তু বিপ্লব বেঁচে রইল। বলশেভিকরা যদি কনস্টিটিউয়েণ্ট এসেমব্লিকে ধরে থাকত তাহলে কী হত এখন তা সহজেই অনুমান করা যেতে পারে।