পাতা:কোন পথে? - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কংগ্রেস ও সাম্প্রদায়িক সংগঠন ৪ঠা মে, ১৯৪০-এর ফরওয়ার্ড ব্লক’এ স্বাক্ষরিত সম্পাদকীয়। খুব বেশিদিন আগে নয় এমন একসময় ছিল যখন কংগ্রেসের স্বনামধন্য নেতারা হিন্দুমহাসভা ও মুসলিম লীগের মত সাম্প্রদায়িক সংগঠনের সদস্য ও নেতা হতে পারত। তখনকার দিনে এইসব সাম্প্রদায়িক সংগঠনের সাম্প্রদায়িকতা তেমন প্ৰকট ছিল না । এই কারণে লালা লাজপৎ রায় হিন্দুমহাসভার নেতা হতে পেরেছিলেন এবং আলী ভাইরা হতে পেরেছিলেন মুসলিম লীগের নেতা । বাংলায় বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটির এবং বঙ্গীয় প্রাদেশিক কনফারেন্সের একজন প্রাক্তন প্রেসিডেণ্ট, মৌলানা আক্রম খা মুসলিম লীগেরও একজন নেতা ছিলেন । কিন্তু সাম্প্রতিককালে অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। এই সাম্প্রদায়িক সংগঠনগুলি আগের থেকে অনেক বেশি সাম্প্রদায়িক হয়ে উঠেছে । এরই প্ৰতিক্রিয়ায়, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস তার গণতন্ত্রে একটি ধারা যোগ করেছে, তাতে বলা হয়েছে হিন্দুমহাসভা বা মুসলিম লীগের মত কোন সাম্প্রদায়িক সংগঠনের সদস্য কংগ্রেসের নির্বাচিত কমিটির সদস্য হতে পারবে না । যেহেতু কংগ্রেস এই নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করেছে, কোন কোন মহলে এইসব সাম্প্রদায়িক সংগঠনকে অস্পৃশ্য বলে গণ্য করার মনোভাব দেখা দিয়েছে। সামাজিক অস্পৃশ্যতাকে যখন আমরা দূর করতে চেষ্টা করছি, তখন মনে হচ্ছে রাজনৈতিক অস্পৃশ্যতাকে আমরা উৎসাহ দিচ্ছি। ফলত যখনই এই সংগঠনগুলিকে কংগ্রেসের কাছাকাছি আনবার প্রয়াস করা হয়, তখন অনেকের উঁচু মাথা তাতে হেঁট হয়ে যায়। পৌরক্ষেত্রে বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটি যখন হিন্দুমহাসভার সঙ্গে এবং পরে মুসলিম লীগের সঙ্গে একটা বােঝাপড়ায় আসতে চায়, তখন তাদের ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছিল।