পাতা:কোন পথে? - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্যারিসের পর ১৫ই জুন, ১৯৪০, ফরওয়ার্ড ব্লক-এ স্বাক্ষরিত সম্পাদকীয়। এই সেদিন নাৎসীবাহিনী যখন মুখে “নাখ পারিস" ( “প্যারিস চলো” ) আওয়াজ করতে করতে জার্মান সীমান্ত অতিক্রম করে হল্যাণ্ড ও বেলজিয়ামে অনুপ্ৰবেশ করল, তখন কে ভাবতে পেরেছিল তারা এত শীঘ্ৰ তাদের লক্ষ্যে উপনীত হতে পারবে ? আমাদের চোখের সামনে সামরিক রণকৌশলে এ যেন এক অলৌকিক ঘটনা । এর সঙ্গে তুলনা চলতে পারে নেপোলিয়নের যুদ্ধাভিযান কিংবা ১৮৭০-এর ফ্রাঙ্কো-রুশিয়ান যুদ্ধে সিডানে বিপৰ্যায়। ফরাসী হাই কমাণ্ড যাই বলুক না কেন, প্যারিসের পতনের পর যন্ত্রচালিত যানবাহন, অসংখ্য ট্যাঙ্ক ও বোমারু বিমানের সামনে উল্লেখযোগ্য প্রতিরোধ আর সম্ভব নয়। ট্রেনচ থেকে যুদ্ধ করার দিন শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু এর পরে কী ? একথা সুস্পষ্ট যে রোনা'র সরকার গ্রেট ব্রিটেনকে তার ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিয়ে জার্মানির সঙ্গে আলাদাভাবে শান্তিচুক্তি সম্পাদন করবে না। কিন্তু কতদিন তিনি ফরাসী জনসাধারণের আস্থাভাজন হয়ে থাকতে পারবেন ? তঁর কেবিনেটের পতন, জার্মানি ও ইটালির কাছ থেকে লোভনীয় প্ৰস্তাব, ঐসকল শর্তে শান্তিচুক্তি করতে প্ৰস্তুত এমন একটি নতুন কেবিনেট-এই সব ঘটনা একেবারে অসম্ভব বলে অগ্ৰাহ করা যায় না । এই সেদিন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মিস্টার উইনস্টন চাৰ্চিল তঁর ঐতিহাসিক বক্তৃতায় এই বিষয়ে অশুভ ইঙ্গিত করেছেন । এবং ইংলণ্ড ? ফ্রান্স থাক বা যাক ইংলণ্ড কী করবে ? এই প্রশ্নের জবাব দিতে পারে ব্যাখ্যাতীত সেই শক্তি-“জনসাধারণের মনোবিল” । টুর্ভাগ্যবশত ব্রিটিশ জনগণের মনোেবল বেশ মোক্ষম ধাক্কা খেয়েছে এবং তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ প্ৰধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীদের বক্তৃত ।