পাতা:কোন পথে? - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শাস্তিমূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে বিরতি আগস্ট ১৯, ১৯৩৯ ৷৷ কংগ্রেস থেকে কাৰ্যত তিন বছরের জন্যে আমাকে বহিষ্কার করার যে সিদ্ধান্ত ওয়ার্কিং কমিটি নিয়েছে আমি তা সাদরে গ্ৰহণ করছি। গত কয়েক বছর ধরে “দক্ষিণপন্থীদের জোট বাঁধবার’ যে প্ৰক্ৰিয়া চলে আসছে প্রদেশে প্রদেশে মন্ত্রিত্বের গদি নেবার ফলে তা আরও জোরদার হয়ে উঠেছে। সেই প্রসঙ্গে যুক্তিসঙ্গীত পরিণতি এই সিদ্ধান্ত । ওয়ার্কিং কমিটির এই ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে কংগ্রেসের বর্তমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের আসল চরিত্র এবং তারা যে ভূমিকা পালন করে চলেছে তা উদঘাটিত হয়ে পড়ছে । আমাকে যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তা তাদের দিক থেকে সম্পূর্ণ ন্যায়সঙ্গত। নিয়মতান্ত্রিকতা ও সংস্কারবাদের দিকে নিয়মিত সরে যাওয়া সম্পর্কে দেশকে সতর্ক করে যে-সব প্ৰস্তাবে কংগ্রেসের বৈপ্লবিক চরিত্রকে হানন করার প্রয়াস করা হয়েছে তার প্রতিবাদ করে, বামসংহতির উদ্দেশ্যে • কাজ করে, এবং সবশেষে হলেও যার গুরুত্ব কম নয়, আসন্ন সংগ্রামের জন্য প্ৰস্তুত হতে দেশৰাসীর কাছে ক্রমাগত আবেদন করে- আমি এমন একটি অপরাধ করেছি। যার জন্যে আমাকে দণ্ডভোগ করতেই হবে । আমাকে যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে আমার অগণিত দেশবাসীর কাছে তা অভিাবিত আঘাত বলে মনে হতে পারে, কিন্তু আমার কাছে তা হয়নি। এতে প্রকট হয়েছে, নিয়মতান্ত্রিকতা এবং গণসংগ্রামের মধ্যে বিরোধের যথার্থ যুক্তিসঙ্গীত পরিণতি এবং আমাদের রাজনৈতিক বিবর্তনের আঁনিবাৰ্য এক পর্ব। এইজন্যে, আমার মধ্যে রাগ বা তিক্ততা লেশমাত্র নেই। শুধু এই ভেবে আমার দুঃখ হচ্ছে যে, ওয়ার্কিং কমিটি বোঝেনি তাদের এই ধরনের কাজে আমি যতটা আঘাত পাব তার চেয়ে তারাই আঘাত পাবে বেশী ।