পাতা:কোন পথে? - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/২৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জেলের চিঠি २७१ গান্ধীমার্ক অনশন পর্ব এই সঙ্গেই শেষ হয়ে গেল। বোঝা যাচ্ছে ভুল ভেবেছিলাম। পর্বতপ্ৰমাণ ভুলভ্রান্তি করার পরেও মহাত্মাজী শুধরাবেন না ! উদ্দেশ্য যদি নৈতিক চাপ না হয়। এই অনশন তাহলে কিসের জন্য এবং অহিংসার ঋষিকে কেনই বা এই উপায় গ্ৰহণ করতে হল ? অনশনের কারণকে তিনি অন্তরের, আলোকে দর্শন করতে পারেন, কিন্তু তাই বলে হিংসার চরিত্রে কোন হেরফের হয় না । নৈতিক চাপ বা হিংসা তার ফলে অহিংসায় রূপান্তরিত হয় না। আমাদের মত সম্পূর্ণ আলাদা। আমাদের অহিংসার সঙ্গে দর্শনের বা আধ্যাত্মিকতার যোগ নেই, অতএব অনশন বা প্ৰায়োপবেশনের প্ৰয়োজনকে আমরা অস্বীকার করি না । প্রকৃতপক্ষে, আমি নিজেই আগে অনশন ধর্মঘট করেছি এবং বাধ্য হলে আবার তা করতে পারি। যতীন দাস যখন অনশন ধর্মঘট করে জীবনোৎসর্গ করলেন মহাত্মার কাছ থেকে তঁর উদ্দেশ্যে একটিও সহৃদয় উক্তি শোনা গেল না । প্রকৃতপক্ষে তিনি এক বন্ধুকে লিখে জানান, তিনি যদি মুখ খুলতেন তাহলে তঁকে অগ্ৰীতিকর কিছু বলতে হত। কিন্তু মহাত্মা গান্ধী নিজের খুশিমত যখন ইচ্ছা অনশন ধর্মঘট করতে পারেন এবং আমাদের বিশ্বাস করতে হবে, এই উপায়ে তিনি যখন নৈতিক চাপ দেন, তখন তা অহিংসার তুরীয় অবস্থায় রূপান্তরিত হয়। আমাদের বিশ্বাসপ্রবণতার নিশ্চয় একটা সীমা আছে। এমনকি এককালে যারা সম্পূর্ণ অন্ধ ছিল তাদেরও চোখ খুলতে আরম্ভ হয়েছে। মহাত্মার এই অনশন ধর্মঘট সম্পর্কে আমার প্রধান ‘আপত্তি এই যে, সর্বেসর্ব কর্তৃত্ব গ্ৰহণ করে কংগ্রেসকে ক্লিাবত্বে পরিণত করার পর মহাত্মা অনশনকে গণআন্দোলনের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করছেন। আইন অমান্যের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক রাজনৈতিক পদ্ধতির পরিপূরক হিসেবে ব্যক্তিগত বা জাতিগত সম্মান ও ন্যায়বিচার অক্ষুন্ন রাখার জন্যে এই অন্ত্রের ব্যবহারে ব্যক্তিগতভাবে আমার আপত্তি থাকত না, কিন্তু সেক্ষেত্রে গণআন্দোলনের বদলে অনশনের কথা উঠত না। রাজকোটের ক্ষেত্রে যেমন দেখেছি, এই ক্ষেত্রেও তেমনি দেখতে পাচ্ছি, গণ