পাতা:কোন পথে? - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অতীতে দৃষ্টিপাত মনোভাবের বদলে সংগ্ৰামী মনোভাব একান্তভাবে প্রয়োজন । সমস্ত কাৰ্যকলাপের গতিশক্তি আসে মনোভাব থেকে। ফরওয়ার্ড ব্লক এবং তার কার্যক্রম সম্পর্কে নানা প্ৰকার সমালোচনা করা হয়েছে। তার মধ্যে কিছু সত্য, কিছু অভিসন্ধিপ্রসূত। মানুষের তৈরি কোন প্ৰতিষ্ঠানই ত্রুটিহীন বলে দাবি করতে পারে, না। অতএৰ ফরওয়ার্ড ব্লকও দোষত্রুটি মুক্ত হতে পারে না। কিন্তু কথা এই--আরও ভালো এমন কিছু বিকল্প বা পরিবর্ত প্ৰস্তাব কি করা হয়েছে যার দ্বারা আমরা যথাসম্ভব কম স্বাৰ্থত্যাগ করে খুব তাড়াতাড়ি আমাদের জাতীয় লক্ষ্যে পৌছতে পারি ? যদি এইরকম বিকল্প কিছু প্ৰস্তাব করা হয় আমরা সানন্দে তা গ্ৰহণ করব । যাই তোক ফরওয়ার্ড ব্লক আদর্শের জন্য, ফরওয়ার্ড ব্লকের জন্য আদর্শ নয় । কিন্তু দ্বিধার সঙ্গে বলতে হচ্ছে আরও ভালো কোন বিকল্প সম্ভব নয় । অতীতের ঘটনাবলীর দিকে ভাকিয়ে দেখলে একথা না বলে পারা যায় না, অতীতে আমরা যা বলেছি। যথাসময়ে তা যদি মেনে নেওয়া ৩ ত এবং কার্যকর করা হত তাহলে আজ অবস্থা কত অন্যরকম হত । fত্রপুরি কংগ্রেসের ছমাস পরে ইওরোপে যুদ্ধ বাধে এবং ভারতকে 'ওতে জড়িয়ে ফেলা হয়। যে সঙ্কটে আমরা জড়িয়ে পড়লাম তার জন্যে সারা দুনিয়া প্ৰস্তুত হয়েছিল, একমাত্ৰ ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্ৰস্তুত ছিল না। এইরকম অযোগ্য নেতৃত্ব দুনিয়ার আর কোথাও পাওয়া দুর্লভ । এমনকি যুদ্ধ বান্ধবার পরও নেতারা বসে বসে খালি ভাবছেন। আর ভাবছেন। প্ৰতি পদক্ষেপে দ্বিধা, সংশয়, দুর্বলতা। হরিপুরা ও ত্রিপুরি কংগ্রেসের প্রস্তাবগুলির কথা আর মনে নেই । যদি তা মনে থাকত, ৩াহলে আমরা দ্বিধা ও নিস্ক্রিয়তা প্ৰত্যক্ষ করতাম না, তার জায়গায় দেখতাম স্থিরসিদ্ধান্ত ও কর্মেদ্যম । আমাদের এখনও কি বুঝতে বাকি আছে, নতুন দিল্লীতে তীর্থযাত্রা করে আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌছব না ? স্বরাজের চাবিকাঠি ওখানে পাওয়া যাবে না, তা পাওয়া যাবে আমাদের অন্তর্লোকে ৷”