পাতা:ক্রৌঞ্চ-মিথুনের মিলন-সেতু - অনুরূপা দেবী.pdf/১১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ক্রৌঞ্চ-মিথুনের মিলন-সেতু
১০৪

গিয়েছি। সেই ছোট্ট সরু শিশির গুঁড়োটুকু থেকে এক অণু পরিমিত বস্তু আমার ভোরের বেলার বেড্-টির তলানিটুকু খেতে নিত্য সমাগত (জানলা দিয়ে) কাঠবেড়ালীটার বিশ্বস্ত পানীয়টুকুতে মিশিয়ে দিলেম। পরম পরিতোষে সে চেটেপুটে খেয়ে লাফাতে লাফাতে চলে গেল, পরদিন কিন্তু আর ফিরে এলো না বাগানে গিয়ে বেশী খুঁজতে আমায় হলো না; আমার ঘরের দিকেই যে কাঞ্চন ফুলের গাছটা দিয়ে সে আমার ঘরের জানলায় এসে পৌঁছতো, তারই তলায় তার প্রাণহীন দেহটা গুটিশুটি হয়ে লুটিয়ে পড়ে রয়েছে। মনে একটু কষ্ট যে হয়নি তা’ কি বলতে পারি? কিন্তু এ রকম পাপ তো আগে ঢের করেছি, আবার হয়ত এই নিয়ে করতেই হবে।

 আরও কম মাত্রায় দিব্যেন্দুর খুব সৌখীন একটা কুকুরকেও ঐ গুঁড়োর একটু কণা দিন তিনেক খাওয়ানোর পর তার ওজন নেওয়ালেম, তিন দিনে প্রায় তিন পাউণ্ড কমে গেছে সে, মরণ দশায় পৌঁছুতে খুবই কম বাকি। বলা বাহুল্য, একটা অজুহাতে ওর ওজন নিয়ে তবেই এই এক্সপেরিমেণ্ট আরম্ভ করেছিলেম।

 কোন ভুল নেই,—ডলিকে এই দিয়েই শ্লো-পয়জন করা হচ্ছিল, —দিব্যেন্দুর ছেলে এরই দ্বারায় হত হয়েছে।

 কুকুরটা আধ হাত সাদা শুকনো জিভ বার করে পড়ে পড়ে ধুঁকছিল, আমার সুপ্রসিদ্ধ সর্প-বিষের প্রতিষেধক জবরদস্তি করে ওকে খাইয়ে দিলাম। দুঘণ্টা পরে দেখতে গেছি, কৃতজ্ঞ জীব লেজ তুলে ছুটে এসে আমার গায়ে পায়ে মুখ ঘষে ঘষে—ওঃ সে কি পরমানন্দই যে জ্ঞাপন করলে, মানুষেও অমনটি পারে না।

 ডলিকে তৎক্ষণাৎ গিয়ে একটা ডোজ অ্যানটি-হেমলক আমি খাইয়ে দিলেম। নিঃসন্দেহে এইবারে ওর সমস্ত জড়ত্ব, আধিব্যাধি