পাতা:ক্রৌঞ্চ-মিথুনের মিলন-সেতু - অনুরূপা দেবী.pdf/১২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ক্রৌঞ্চ-মিথুনের মিলন-সেতু
১১২

দ্বিধায় অবিলম্বে দুটি ফেঁটা দিয়ে দেবে। অন্য বিষেও যদি ঐ লক্ষণ থাকে, ফল দিতেও পারে। এর ফরমূলাও আছে ওরই মধ্যে; যত্ন করে রেখ এবং আমার এই তপস্যার ফলকে ব্যর্থ হতে দিও না। এর বাড়া সুহৃদ মনুষ্য-সমাজে নেই বললেই চলে।”

 এ সেই ব্যক্তি,—যে ফকিরের আতিথ্যের প্রতিদানে তার সর্ব্বস্ব লুণ্ঠন করে ‘বিষ’ সংগ্রহ করে এনেছিল। এ সেই লোক যে একদা নিজেই ভুলক্রমে সেই বিষ খেয়ে ফেলে আমার কাছে প্রতিষেধক পাবার জন্য এসেছিল। জানি না, কি করে খবর পেয়েছিল ঐ বস্তুটি আমি আহরণ করতে পেরেছি। আর এই নির্জ্জন দ্বীপ-নিবাসের এই সকল ভয়াবহ রহস্যময় ব্যাপারের ব্যাপারীও সেই একই লোক। তা না হলে এই পিরামিড-বিষের উত্তরাধিকারী তো আজ পৃথিবীর মধ্যে আর দ্বিতীয় কেউ বর্ত্তমান নেই! এও সেই একই ব্যক্তি। ফকিরের সঙ্গে সঙ্গেই বাকশক্তি বিলুপ্ত না হলে এবং ঘণ্টা কয়েক পরেই মৃত্যু না ঘটলে তার সম্বন্ধে একটা দৈহিক বর্ণনা পেতে পারা যেতে পারতো, তাও তো ঘটেনি যে আমরা সেই আশ্চর্য্য আগন্তুককে চিনে নেবো!

 দিব্যেন্দু দিন, দুই অত্যন্ত দুর্ব্বল থেকে আস্তে আস্তে সামলে উঠতে লাগলো। আমি দিনরাত তাকে নিয়েই ব্যস্ত রইলেম। এর ভিতর একটি খাঁটি ইংলিশ লেডি (গবর্ণেস) বড় বড় সার্টিফিকেট নিয়ে এসে ডলির ভার তুলে নিলেন। আমি হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেম। বাড়ীতে যে রকম সর্প-যজ্ঞ চলেছে, এ বিদেশী মেয়ে আর যাই হোক কেন, যজ্ঞেশ্বরের প্রেরিত স্পাই ত আর হবে না। ইলাকেও একটু দেখাশোনা স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়েই উনি করছেন দেখলাম। বয়স্কা মহিলা শিক্ষিতা, মনটিও হয়ত সহজাত সেবাধর্ম্মী।

 ইলাকে ইচ্ছা করেই আমি ওর স্বামীর ব্যাপারটা সমস্তই সঠিক