পাতা:ক্রৌঞ্চ-মিথুনের মিলন-সেতু - অনুরূপা দেবী.pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ক্রৌঞ্চ-মিথুনের মিলন-সেতু
১০

লাভ করিয়াছে! বলিলেন, আগ্রহ মধুর কণ্ঠে বলিলেন, “তোমায় ছেড়ে কিছুই আমার ভাল লাগে না যে সুকু! তুমি কেন আমায় ছেড়ে গেলে রাণি?”

 অদৃশ্য সুকু উত্তরে লিখিল, “আমি কি ইচ্ছে করে চলে গেছি নাকি? নিয়তি আমায় টেনে এনেছে, কি কষ্ট, তাই বলে কি তোমায় অত কুড়ে হলে কখন চলে?”

 “কুড়ে!” সবিস্ময় অর্ধস্ফুট আর্ত্তনাদ। “কুড়ে!”

 “তা’ না তো কি! চাকরী ছাড়লে কি জন্যে? পুরুষ মানুষ। কাজকর্ম্ম ছেড়ে ঘরে বসে থাকলে শরীর মন ভাল থাকে কখন? কি চেহারা করেছ, আরসিতে কি চেয়েও দেখ না?”

 আবার মনটা প্রসাদ প্রসন্নতায় ভরিয়া উঠিল: “কি হবে শরীর নিয়ে, তোমার কাছে যত শীগ্‌গির যেতে পারি ততই তো ভাল।”

 “আহা কি কথাই বল্লেন! আর আমার মেয়েটার! ওর কি বিয়ে দেবে না? পড়া তো ছাড়িয়েই দিয়েছো?”

 ঠিক সুকুমারীরই চরিত্রগত পরিচয়! ঈষৎ অভিমানে চন্দ্রকুমার উত্তর দিলেন, “পড়া আমি ওর ছাড়াইনি সুকু! ও নিজেই ছেড়েছে। আর বিয়ের কথা তো একটা দুটো হচ্চে, ওই তো বিয়ে করতে রাজী হয় না।”

 “হ্যাঁ, সেও তোমারই জন্যে! তুমি যদি সহজ ভাবে থাকতে, ওকে তোমার জন্যে অতখানি ভাবতে বা কষ্ট পেতে হতো না! আচ্ছা আজ যাই, না না আর থাকতে পারছি না, কষ্ট হচ্চে।”

 সেই পতি-পত্নী, সেই মান-অভিমান, সেই কর্ত্তব্য-অকর্ত্তব্যের ঘরোয়া হিসাব-নিকাশ! তবে আর যায় কি? হারায় কোথায়? শুধু যদি একবার চোখের দেখাটা দেখা যাইত!