পাতা:ক্রৌঞ্চ-মিথুনের মিলন-সেতু - অনুরূপা দেবী.pdf/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭
ক্রৌঞ্চ-মিথুনের মিলন-সেতু

 সুনীতি প্রমাদ গণিল, তাড়াতাড়ি করিয়া বলিল, “নিশ্চয় পারেন। মা তোমায় কত রকম ভাল ভাল জিনিষ তৈরী করে করে খাওয়াতেন, সে কি রোগা হ’বার জন্যে? তুমি না খেলে তাঁর কষ্ট হবে না?”

 সর্ব্বনাশ! কেনই বা সে এমন কথাটা হঠাৎ বাপকে খুসী করিবার লোভে বলিয়া ফেলিয়াছিল? —উঃ কেন মরিতে বলিল?

 ঝন্ ঝন্ শব্দে হাতের প্লেটখানা টান মারিয়া মাটিতে আছড়াইয়া ফেলিয়া দিয়া চন্দ্রকুমার লাফাইয়া উঠিয়া দু হাত ঊর্দ্ধে তুলিয়া অকস্মাৎ কানফাটা চীৎকার আরম্ভ করিলেন:

 “কে বল্লে তোকে? কে বল্লে তোকে? তার কষ্ট হবে কে তোকে বলেছে? বল্? বল্? শীগগির করে বল্—বল্—না হলে আজ তোকে আমি আস্ত পুঁতে ফেলবো। মেয়ে বলে কিছু বলি না বলে। তার যদি আমার জন্যে এতটুকুও কষ্ট হতো, তাহলে সে বলতে পারতো, ‘ডাকলেও আর আসবে না’! নেমকহারাম! বেইমান কোথাকার! আর তুই, তুইও তো তারই গর্ভের মেয়ে, —কই, বলতে পারলি না তো, কি করে তুই জানলি যে তার কষ্ট হয়! বল কে তোকে এ-কথা বলেছে? বল্, না হলে তোকে। আজ আমি দু-খানা করে কেটে ফেলে ফাঁসি যাবো।”

 “আমিই তো ও-কথা বলেছি ওঁকে,—আপনি একটু ঠাণ্ডা হোন দেখি।”

 সুনীতির হাত কাঁপিয়া চায়ের পেয়ালার খানিকটা চা চল্‌কাইয়া টেবিল ক্লথের উপর পড়িয়া গেল, বাপকে দিবার জন্য সে পেয়ালাটা হাতে লইয়াছিল, নামাইয়া রাখিতে ভুলিয়া গিয়াছে।

 “কি? কি বল্লে? তুমি বলেছ? তুমি? তুমি? কে তুমি? তুমি কি জানো যে ও-কথা ওকে বলেছ? সুকুমারীর সঙ্গে তোমার