পাতা:ক্রৌঞ্চ-মিথুনের মিলন-সেতু - অনুরূপা দেবী.pdf/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭১
সর্ব্বকালের হাওয়া

আ, মর্ মর্! মুখপুড়ি ছুঁড়ি অমন গুণের সোয়ামীকে আবার সোহাগ করে বাঁচিয়ে গেলেন! আদিখ্যেতা দেখে বাঁচিনে।”

 হি-হি করিয়া হাসিয়া উঠিয়া অতসী হাস্যকম্পিত স্বরে মন্তব্য করিল, “যমেরও অরুচি যে ও—যম ওকে নেবেক ক্যানে।”

 এবার আর তার কণ্ঠস্বরে ভয়ের কম্পন ছিল না, কৌতুক উছলিত হইতেছিল

 মা বলিল, “তাই বটেক, কি গব্বেই ধরেছিল—থাকি আঁটকুড়ী! আঁতুড়ে নুন জোটাতে পারে নাই একটুক্!”

 পরাণের দুচোখ বারেকমাত্র জ্বলন্ত কয়লার মতই দপদপ করিয়া জ্বলিয়া উঠিলেও পরক্ষণে যেন বরুণবাণে নির্ব্বাপিত অগ্নিবাণের মতই তার সেই দুচোখের অগ্নিশিখা একান্ত ব্যর্থতায় পর্য্যবসিত হইয়া গেল। দুচোখ ভর্ত্তি সহসা সমাগত অনাহুত অশ্রুর আবিলতায় সে প্রায় অন্ধের মত স্খলিত পদে যে-পথে আসিয়াছিল তাহারই অভিমুখে ফিরিয়া চলিল, গভীর দীর্ঘশ্বাসের ভারে ভারাক্রান্ত বক্ষ ফুলিয়া উঠিতেছিল, আর্ত্তনাদের মতই তার অবরুদ্ধ-স্বর কণ্ঠ হইতে একটা অস্ফুট শব্দ মাত্র বাহির হইল, “জয়ি, জয়ি! তোকে আমি চিনিনি, তুই দেবতা, আমি পিচেশ।”