পাতা:ক্রৌঞ্চ-মিথুনের মিলন-সেতু - অনুরূপা দেবী.pdf/৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ক্রৌঞ্চ-মিথুনের মিলন-সেতু
৮২

কতবারই এসেছিল। যেতে যে অনিচ্ছা ছিল তাও নয়; কিন্তু কিছুতেই সেটা ঘটে ওঠেনি। ঐ যে আবিষ্কারকের চিত্ত, ও আর কোন কিছুতেই যেন আকৃষ্ট হতে চায় না! নূতন নূতন আবিস্ক্রিয়ার ঝোঁকে নেশায় বুঁদ হয়ে ওরই পিছনে ঘুরে বেড়াতে চায়। মনটা বড় নীরস ও কঠোর হয়ে যাচ্ছে, এটা তো ভাল নয়।

 এ কয়েক বৎসরে আমারও ত আর আগের দিন নেই। সেই পচা গলির বাসিন্দা বিনয় বসু ত সেই ঝড়ের রাতেই নবজন্মে জন্মে গেছে। আশ্চর্য্য আগন্তুকের ভৌতিক আবির্ভাব এবং কি বলি তাকে?—‘রেসারেক্‌সান’?—মৃত্যু থেকে পুনরুত্থান? সে এক অদ্ভুত কাণ্ড তো বটেই—সেই থেকে আমার ভাগ্যদেবতা অকৃপণ হস্তে আমাকে “রূপ” না থোক, “রূপা” এবং “দিশোজহি” যশ প্রচুরতর রূপেই ঢেলে দিয়েছেন ও দিচ্ছেন। কাজেই ডক্টর বি. কে. বসু এম. বি. (এক্ষণে এম. ডি., এফ. আর. সি. এস. ইত্যাদি) আজ সেই পচা-বাড়ীর ভাড়াটে নয়, চৌরঙ্গী অঞ্চলে প্রাসাদ ভবনের অধিবাসী। তার নিজের প্রকাণ্ড ল্যাবরেটারীতে পাঁচ-সাতজন ভাল ভাল নামকরা ডাক্তার ও অসংখ্য কর্ম্মচারী খাটছে। স্বদেশেই শুধু নয়, সুদূর প্রাচ্যে ও পাশ্চাত্যে নামের সঙ্গে গ্রোস গ্রোস তার অচিন্তনীয় আবিষ্কারের ফল প্যাক হয়ে হয়ে যাত্রা করছে।

 —যাক, আপনার কথাকে পাঁচ কাহন করতে চাইনে, ওদের কথাই বলি। দিবু তার ছেলের অন্নপ্রাশনে নিমন্ত্রণ করে পাঠায় বিস্তর অনুনয় করে, সে সময়ে বিদেশ থেকে কয়েকজন সায়াণ্টিষ্ট কলকাতায় এসেছেন, আমার ল্যাবরেটারী দেখতে আসতে ইচ্ছুক, তাই যেতে পারলাম না। অবশ্য যথোচিত ভাবেই বন্ধুর প্রথমজাত নবকুমারকে তার প্রাপ্য পাঠিয়ে দিয়ে কথঞ্চিৎ কর্ত্তব্য পালন করতে ভুলিনি এবং তার জন্যে ফিরতি ডাকে সাভিমান অনুযোগ লাভও