পাতা:খুনী কে - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
২৬
দারােগার দপ্তর, ১৬৫ সংখ্যা।

বুঝিতে পারিলাম। বলিলাম, “আমি দামোদরের খুনের বিষয় ও রাম সর্দ্দারের সমস্তই জানি।”

 কেশব বাবু অতি মৃদুস্বরে বলিয়া উঠিলেন, “কি সর্ব্বনাশ!”

 আমি কোন কথা কহিলাম না। তখন তিনি যেন আপনা আপনি বলিতে লাগিলেন, “ঈশ্বর যাহা করেন মঙ্গলের জন্য। যে দিন হইতে যতীন্দ্র জেলে গিয়াছে, সে দিন অবধি আমিও শয্যাগত হইয়াছি;—অনুতাপের জন্য নহে, কেবল আমার দোষে একজন নিরীহ প্রাণী শাস্তি পাইবে এই জন্য। শেষে এই সাব্যস্ত করিয়াছিলাম যে, যদি আমার জীবন থাকিতে থাকিতে যতীন্দ্রনাথের ফাঁসির হুকুম হয়, তাহা হইলে আমি স্বয়ং সমস্ত কথা প্রকাশ করিয়া নিজেই শাস্তি লইব।”

 কেশব বাবুর কথায় আমি অত্যন্ত সন্তুষ্ট হইলাম। বলিলাম, “আপনাকে এখনও সেইরূপই করিতে হইবে। যদি আমি আপনাকে বন্দী করিয়া লইয়া যাই, যদি রোগ হইতে আপনি মুক্ত হন, তাহা হইলে আপনার নিশ্চয়ই ফাঁসি হইবে। কিন্তু আপনার এখন যেরূপ অবস্থা দেখিতেছি, ও আপনার চিকিৎসকের নিকট হইতে আমি যতদুর জানিয়াছি, তাহাতে বেশ বুঝয়াছি, এ যাত্রা আপনার কোনরূপেই রক্ষা নাই। আপনার মৃত্যুকাল নিকটবর্ত্তী, কিন্তু মরিবার সময় একজন নিরপরাধী ব্যক্তির প্রাণ নাশ করাইয়া পরকালের পথ নষ্ট করেন কেন? ইহজন্মে যাহা কারবার করিয়াছেন, যাহা হইবার তাহা হইয়াছে; এখন অকপট চিত্তে সমস্ত কথা স্বীকার করিয়া, নিরপরাধী ব্যক্তির প্রাণ দান করিয়া, নিশ্চিন্তমনে ইহধাম পরিত্যাগ করুন।”

 আমার কথা শুনিয়া লাহমোহন বাবু আমার কানে কানে