পাতা:খুনী কে - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
খুনী কে?
৩১

চাদরে সর্ব্বাঙ্গ আবৃত করিয়াছিল। দামোদরকে দেখিয়া আমার দয়া হইল। কিন্তু আমি প্রথমে তাহাকে কোন কথা বলিতে সাহস করিলাম না। দামোদর আমার মনের ভাব বোধ হয় বুঝিতে পারিয়াছিল। সে আমাকে নির্জ্জনে ডাকিয়া লইয়া গেল এবং বলিল, ‘তার পর সর্দ্দার এখন তুমি বড় লোক—জমীদার। আর আমি ভিখারীর মত ঘুরিয়া বেড়াইতেছি, এক সময়ে আমি তোমার কত উপকার করিয়াছি, আর এখন তুমি থাকিতে আমার এই দুর্দ্দশা! যদি ভাল চাও, আমার উপায় করিয়া দাও। নতুবা পূর্ব্ব কথা সমস্তই প্রকাশ করিয়া দিব।’ দামোদরের কথা শুনিয়া আমার ভয় হইল। আমি তাহাকে আশ্বাস দিলাম এবং খানিকটা জমী নিষ্কর ভোগ দখল করিতে দিলাম। দামোদর তখন সন্তুষ্ট হইল এবং একরূপ আনন্দে দিনপাত করিতে লাগিল। আমাকেই তাহার ও তাহার পুত্রের ভরণপোষণের অর্থ দিতে হইত। তা ছাড়া, যখনই দামোদরের টাকার দরকার হইত, তখনই সে আমার নিকট হাত পাতিত। আমিও ভয়ে তাহার অবশ্যক মত অর্থ দিতাম। ক্রমে তাহার সাহস বাড়িয়া উঠিল। তাহার পুত্র যতীন্দ্র বড় ভাল ছেলে। তাহার বয়স তখন বিশ বৎসর, আমার অমলা এগার বৎসরের। দামোদর কথায় কথায় একদিন তাহার পুত্র যতীন্দ্রের সহিত আমার কন্যার বিবাহের কথা উত্থাপন করিল। আমি তাহার সাহসে আশ্চর্য্য হইলাম। বলিলাম, ‘তুমি যে দিন দিন বড় বাড়িয়া উঠিতেছ! তুমি কি মনে কর, তুমি যাহা ইচ্ছা তাহাই করিবে? তোমার ন্যায় হতভাগ্যের পুত্রের সহিত জমীদার-কন্যার বিবাহ সম্ভবে না।’ দামোদর আমার কথায় হাসিয়া বলিল, ‘অত রাগ করিলে কি হইবে? তোমার