পাতা:খুন না চুরি? - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০
দারোগার দপ্তর, ১৯৩ সংখ্যা।

তখন অপর সকলকে সেখান হইতে দূর করিয়া গত রাত্রে যাহার সহিত কথা কহিয়াছিলাম, তাহাকে বলিলাম, “শোভন সিং তোমার নামে যে দোষারোপ করিয়াছেন, তাহাতে তোমাকে ফাঁসীকাষ্ঠে ঝুলিতে হইবে। যদি নিজের মঙ্গল চাও, তাহা হইলে যাহা জান সত্য করিয়া প্রকাশ কর।” শোভন সিং বলেন যে, তুমি তাহার পরম শত্রু এবং আর কোন উপায়ে প্রতিশোধ লইতে না পারিয়া অবশেষে তাহার একমাত্র কন্যাকে হত্যা করতঃ তাহার গাত্রের প্রায় দুই সহস্র টাকার অলঙ্কার অপহরণ করিয়াছ। শোভন সিংএর মুখে শুনিয়াছিলাম, সেই সন্ন্যাসীর নাম ভজন সিং। সত্য মিথ্যা জানিবার জন্য আমি সন্ন্যাসীকে নাম জিজ্ঞাসা করিলাম। সন্ন্যাসী উত্তর করিল, সত্যই তাহার নাম ভজন সিং।

 আমার কথা শুনিয়া ভজন সিং হাসিয়া উঠিল। বলিল, “আমি তাহার শত্রু? না মহাশয়, সংসার-বিরাগী সন্ন্যাসী কাহারও শত্রুতাচরণ করে না। এ জগতে আমারও শত্রু কেহ নাই, আমিও কাহার শত্রু নয়। যেরূপ করিলে আপনার খিশ্বাস হয়, আপনি স্বচ্ছন্দে তাহাই করুন, আমার তাহাতে কোন প্রকার ক্ষতি বৃদ্ধি হইবে না। জীবন ক্ষণস্থায়ী, আজ হউক বা দুদিন পরেই হউক, কোন না কোন দিন আমাকে মরিতেই হইবে।”

 আ। আমি শুনিয়াছি, তুমি অতি অল্পদিনই বিরাগী হইয়াছ, এখনকার কথা বলিতেছি না, পুর্ব্বে যখন তুমি সংসারাশ্রমে ছিলে, তখনকার কথা জিজ্ঞাসা করিতেছি। শোভন সিংএর সহিত তোমার কিরূপ সম্পর্ক আছে? কেনই বা তুমি সংসার ছাড়িয়া সন্ন্যাসী হইলে?

 স। সমস্তই বলিতেছি—যদি একান্তই শুনিতে চান, শুনুন।