পাতা:খুন না চুরি? - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
দারোগার দপ্তর, ১৯৩ সংখ্যা।

 কামিনী চমকিয়া উঠিল! অনেক কষ্টে আত্ম সম্বরণ করিয়া চীৎকার করতঃ বলিল, “কি বল্‌ছো বাবা! আমি কানে একটু কম শুনি বাবা!”

 আমি চীৎকার করিয়া পুনর্ব্বার ঐ কথা বলিলাম। এবার সে তখনই কাঁদকাঁদ সুরে উত্তর করিল, “কোন্‌ ভালখাকি আমার নামে লাগিয়েছে? তার সর্ব্বনাশ হ’ক?”

 অনেক কষ্টে হাস্য সম্বরণ করিয়া আমি বলিলাম “আমি ম্বচক্ষে দেখেছি! কেহই আমাকে তোমার নামে কোন কথা বলে নাই। কেন বৃথা গালাগালি দিতেছ বাছা!”

 কামিনী আমার কথায় যেন সিহরিয়া উঠিল। কিন্তু সেবারও আত্ম সম্বরণ করিয়া হাসিতে হাসিতে আমর দিকে চাহিয়া বলিল, “ও সকল কথা নিয়ে কি তামাসা ভাল দেখায়? তুমি না হয় ভাল মানুষের ছেলে, কোন কথা বলিবে না, কিন্তু কথায় কথায় পাঁচ কাণ হইলে ত সর্ব্বনাশ! কার মনে কি আছে কেমন করিয়া জানিব। ও সকল কথা ছেড়ে দাও—এখন যে জন্য ডেকেছ বল?”

 আমি কমিনীকে নিকটে ডাকিয়া চুপি চুপি বলিলাম, “আমাকে বড় সহজ লোক মনে করো না। আমাকে এখনো কি চিন্‌তে পার নাই? যদি বাঁচবার ইচ্ছা থাকে, সকল কথা প্রকাশ কর। তা না হলে তোমায় জেলে দিব। মেয়েমানুষ বলে ছেড়ে দিব না।”

 কামিনীর মুখ শুকাইয়া গেল। ভয়ে তাহার সর্ব্বশরীর কাঁপিতে লাগিল, কিছুক্ষণ তাহার মুখ দিয়া কোন কথা বাহির হইল না। তাহার মাথা ঘুরিতে লাগিল। সে আর দাঁড়াইতে না পারিয়া আমার পদতলে বসিয়া পড়িল।