পাতা:গল্পগুচ্ছ (চতুর্থ খণ্ড).pdf/১০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৮০
গল্পগুচ্ছ

বিমলাদিদি, বোর্ডিং স্কুলের অহংকারের সামগ্রী ছিল। পিতার মৃত্যুর পরে আজ ক্লাস পড়াবার ভার নিয়েছে; আর এ দিক ও দিক থেকে কিছু টিউশনি করে কাজ চালায়। যে পা’কে একদিন সে ঘৃণা করেছিল সেই পা’কে অর্ঘ্য দেবার জন্য আজ তার বিশেষ করে নিমন্ত্রণ হয়েছে। মৃণালিনী মাসি— সেই সেদিনকার দিদি। আর সেই তার ভাই জগদীশপ্রসাদ, হাইকোর্টের জজ।


এটা গল্পের মতো শোনাচ্ছে, কিন্তু কখনও কখনও গল্পও সত্যি হয়। আর যে লোকটা এই ইতিহাসটা লিখছে সে হচ্ছে অবিনাশ, সেদিন সে লম্বা লম্বা পা ফেলে বড়ো বড়ো পরীক্ষা ডিঙিয়ে চলত— সেও উপস্থিত ছিল সেই প্রথমবারকার পুরস্কারের উৎসবে। সেদিন নানারকম খেলা হয়েছিল— হাইজাম্প, লম্বা দৌড়, রশি টানাটানি— তার মধ্যে এই অবিনাশ আবৃত্তি করেছিল রবিঠাকুরের ‘পঞ্চনদীর তীরে’। কবিতার ছন্দের জোর যত, তার গলার ছিল জোর চার গুণ বেশি। সেই-ই সব চেয়ে বড়ো পুরস্কার পেয়েছিল। আজ সে জজের অনুগ্রহে সেরেস্তাদারের সেরেস্তায় হেড-কেরানির পদ পেয়েছে।

 ৫-৬ মে ১৯৪১
শ্রাবণ ১৩৪৯