পাতা:গল্পগুচ্ছ (চতুর্থ খণ্ড).pdf/১৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গল্পগুচ্ছ

 এই বলে চলতে উদ্যত হল। আবার ফিরে এসে বললে, “আমাকে ভুল বুঝবেন না—আজ আমার তীব্র আনন্দ হচ্ছে যে আপনাকে মুক্তি দিলাম, তার থেকে আমারও মুক্তি। আমার চোখ দিয়ে জল পড়ছে— লুকোব না, জল আরও পড়বে। নারীর চোখের জল তাঁরই সম্মানে যিনি সব বন্ধন কাটিয়ে জয়যাত্রায় বেরিয়েছেন।”

 দ্রুতপদে অচিরা চলে গেল।

 আমি পদধূলি নিয়ে প্রণাম করলাম অধ্যাপককে। তিনি আমাকে বুকে চেপে ধরে বললেন, “আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি তোমার সামনে কীর্তির পথ প্রশস্ত।”


ছোটো গল্প ফুরল। পরেকার কথাটা খনি-খোঁড়ার ব্যাপার নিয়ে। তারও পরে আরও বাকি আছে— সে ইতিহাস নিরতিশয় একলার অভিযান, জনতার মাঝখান দিয়ে দুর্গম পথে রুদ্ধদুর্গের দ্বার-অভিমুখে।

 বাড়ি ফিরে গিয়ে যত আমার প্ল্যান আর নোট আর রেকর্ড্ উলটে-পালটে নাড়াচাড়া করলুম। দেখলুম, সামনে দিগন্তবিস্তৃত কাজের ক্ষেত্র, তাতেই আমার বৃহৎ ছুটি।

 সন্ধেবেলায় বারান্দায় এসে বসলুম। খাঁচা ভেঙে গেছে। পাখির পায়ে আটকে রইল ছিন্ন শিকল। সেটা নড়তে চড়তে পায়ে বাজবে।

৪. ১০. ৩৯
অগ্রহায়ণ ১৩৪৬