আমার হয়েছে সেই দশা। বী, আমার মধুকরী, কবে তুমি আমাকে সম্পূর্ণ করে আবিষ্কার করবে বলো।”
“যখন আমাকে তোমার আর দরকার হবে না।”
“ও-সব অত্যন্ত ফাঁপাকথা। অনেকখানি মিথ্যের হাওয়া দিয়ে ফুলিয়ে তোলা। স্বীকার করো, ‘আমাকে না হলে নয়’ ব’লে জেনেই উৎকণ্ঠিত তোমার সমস্ত দেহমন। সে কি আমার কাছে লুকোবে।”
“এ কথা বলেই বা কী হবে, লুকোবই বা কেন। মনে যাই থাক, আমি কাঙালপনা করতে চাই নে।”
“আমি চাই, আমি কাঙাল। আমি দিনরাত বলব, আমি চাই, আমি তোমাকেই চাই।”
“আর সেই সঙ্গে বলবে ‘আমি ক্লাইসলারের গাড়িও চাই’।”
“ওই তো, ওটা তো জেলাসি। পর্বতো বহিমান্ ধূমাৎ। মাঝে মাঝে ঘনিয়ে উঠুক ধোঁয়া জেলাসির, প্রমাণ হোক ভালোবাসার অন্তর্গূঢ় আগুন। নিবে-যাওয়া ভল্ক্যানো নয় তোমার মন। তাজা ভিসুভিয়স।”
ব’লে দাঁড়িয়ে উঠে অভীক হাত তুলে বললে, “হুরে!”
“এ কী ছেলেমানুষি করছ! এইজন্যেই বুঝি আজ সকালবেলায় এসেছিলে আগে থাকতে প্ল্যান করে?”
“হাঁ, এইজন্যেই। মানছি সে কথা। নইলে এমন মুগ্ধ কেউ কেউ জানা আছে থাকে এ ঘড়ি এখনি বেচতে পারি বিনা ওজরে অন্যায় দামে। কিন্তু তোমার কাছে কেবল তো দাম চাইতে আসি নি, যেখানে তোমার ব্যথার উৎস সেখানে ঘা মেরে অঞ্জলি পাততে চেয়েছিলেম। কিন্তু হতভাগার ভাগ্যে না হল এটা, না হল ওটা।”
“কেমন করে জানলে। ভাগ্য তো সব সময় দেখাবিন্তি খেলে না। কিন্তু দেখো, একটা কথা তোমাকে বলি— তুমি মাঝে মাঝে আমাকে জিগ্গেসা করেছ তোমার লীলাখেলা দেখে আমার মনে খোঁচা লাগে কি না। সত্য কথা বলি, লাগে খোঁচা।”
অভীক উত্তেজিত হয়ে বলে উঠল, “এটা তো সুসংবাদ।”
বিভা বললে, “অত উৎফুল্ল হোয়ো না। এ জেলাসি নয়, এ অপমান। মেয়েদের নিয়ে তোমার এই গায়ে-পড়া সখ্য, এই অসভ্য অসংকোচ, এতে সমস্ত মেয়েজাতের প্রতি তোমার অশ্রদ্ধা প্রকাশ পায়। আমার ভালো লাগে না।”
“এ তোমার কী রকম কথা হল? শ্রদ্ধার ব্যক্তিগত বিশেষত্ব নেই? জাতকে জাত যেখানে যাকেই দেখব শ্রদ্ধা করে করে বেড়াব? মাল যাচাই নেই, একেবারে wholesale শ্রদ্ধা? একে বলে protection, ব্যাবসাদারিতে বাইরে থেকে কৃত্রিম মাসুল চাপিয়ে দর বাড়ানো।”
“মিথ্যে তর্ক কোরো না।”
“অর্থাৎ তুমি তর্ক করবে, আমি করব না। একেই বলে ‘দিন ভয়ংকর, মেয়েরা বাক্য কবে পুরুষেরা রবে নিরুত্তর’।”
“অভী, তুমি কেবলই কথা-কাটাকাটি করবার অছিলা খুঁজছ। বেশ জান আমি বলতে চাইছিলুম মেয়েদের থেকে স্বভাবত একটা দূরত্ব বাঁচিয়ে চলাই পুরুষের