পাতা:গল্পগুচ্ছ (চতুর্থ খণ্ড).pdf/২৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>OSミ গল্পগুচ্ছ জীবিত ও মত ছোটোবোঁ ; পত্নী ] তখনও বেচে । আমার তখনকার দিনে ভোররাত্রিতে উঠে অন্ধকার ছাদে ঘরে বেড়ানো প্রভৃতি অনেকরকম কবিত্ব ছিল। একদিন রাত্রে ঘন্ম ভেঙে যেতেই উঠে পড়লম, ভেবেছিলাম আমার সময় হয়েছে, আসলে কিন্তু তখন দপরে রাত। অন্ধকার বারান্দার ভিতর দিয়ে, দালান পার হয়ে, আমি grope করতে করতে চলতে লাগলম। সব ঘরে দরজা বন্ধ। এ ঘরে ন’বৌঠান ঘমেচ্ছেন, সে ঘরে অন্য কোনো বৌঠান ঘমেচ্ছেন, সব একেবারে নীরব নিঝম । খানিক দরে আসতেই আপিস-ঘরে না কোথায় ঢং ঢং করে দটো বেজে গেল। আমি থমকে দাঁড়ালমে, ভাবলাম—তাই তো, এই গভীর রাত্রে আমি সারা বাড়িময় এমন করে ঘরে বেড়াচ্ছি! হঠাৎ মনে হল আমি যেন প্রেতাত্মা, এ বাড়ি haunt করে বেড়াচ্ছি। আমি যেন মোটেই আমি নয়, আমির রূপ ধরে বেড়াচ্ছি মাত্র। একটা খেয়াল মাথায় এল যে, আচ্ছা, আমি যদি এখন পা টিপে টিপে ঘরে ফিরে গিয়ে মশারিটা তুলে খুব solemn ভাবে প্রশ্ন করি, তুমি জানো আমি কে? তা হলে কেমন হয় ? অবশ্য আমি তা করি নি, করলে খুব একটা scene হত নিশ্চয়। হয়তো রাত্রে মাঝে মাঝে উঠে সে ভাবতেও পারত, তাই তো, এ সত্যিই আর কিছ নয় তো ? কিন্তু ideaটা আমাকে পেয়ে বসল, যেন একজন জীবিত মানুষ সত্যসত্যই নিজেকে মত বলে মনে করছে। – রবীন্দ্রনাথের উক্তি। পণ্যসমতি ছোটোবেী তখন ছিলেন, একবার আত্মীয়স্বজন হঠাৎ এসে পড়ায় আমার বাইরের বাড়িতে শোবার ব্যবস্থা হয়। অনেক রাত্রি পর্যন্ত ভিতরে ছিলাম, এক সময়ে যখন আমার নিদিষ্ট শোবার জায়গায় যাব বলে চলেছি— ভিতরবাড়ি পার হযে বারান্দায় এসে দাঁড়ালমে। ঘড়িতে ঢং ঢং করে দলটো বাজল। সমসত বাড়ি নিস্তবধ । ঘুমিয়ে পড়েছে চারি দিক, আলো-অন্ধকারে বড়ো বড়ো ছায়ায় মিলে সে এক গভীর রাত্রি। সত্যিকারের রাত বলা যার তাকে। বারান্দায় একটাক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলাম, মনে এল একটা কল্পনা— যেন এ আমি আমি নই। যে আমি ছিলম সে আমি নয়, যেন আমার বতমান-আমিতে আর আমার অতীতে একটা ভাগ হয়ে গেছে। সত্যি যদি তাই হয় তা হলে কেমন হয় ? মনে হল যদি পা টিপে টিপে ফিরে গিয়ে ছোটোবোঁকে হঠাৎ ঘমে ভাঙিয়ে বলি– দেখো, এ আমি কিন্তু আমি নয়, তোমার স্বামী নয়—তা হলে কী হয়। ...যা হোক, তা করি নি। চলে গেলম শরতে, কিন্তু সেই রাত্রে এই গল্পটা আমার মাথার এল, যেন একজন কেউ দিশাহারা ঘরে বেড়াচ্ছে। সেও মনে করছে অন্য সকলেও মনে করছে যে, সে সে নয়। — রবীন্দ্রনাথের উন্তি। মংপতে রবীন্দ্রনাথ শ্ৰীশচীন্দ্রনাথ অধিকারী অগ্রহায়ণ ১৩৫২ সংখ্যা মাসিক বসুমতীতে রবীন্দ্রনাথের জীবিত ও মত’ প্রবন্ধে লিখিয়াছেন যে, তাঁহার জ্যেষ্ঠতাত, পাবনার উকিল ও ঠাকুর-জমিদারবাবদের ঘরের উকিল ও আমমোক্তার, তারকনাথ অধিকারীর