পাতা:গল্পগুচ্ছ (তৃতীয় খণ্ড).djvu/২৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করার সময় সমস্যা ছিল।

চোরাই ধন “গ্রহনক্ষত্র কোথায় কী ভাবে মিলেছে চোখে পড়ে না, কিন্তু ওরা দুজনে যে মিলেছে অন্তরে অন্তরে সেটা দেখা যাচ্ছে খাব পষ্ট করেই।” “তুমি বঝেবে না আমার কথা। যখনি আমরা জন্মাই তখনি আমাদের যথার্থ দোসর ঠিক হয়ে থাকে। মোহের ছলনায় আর-কাউকে যদি স্বীকার করে নিই তবে তাতেই ঘটে অজ্ঞাত অসতীত্ব। নানা দুঃখে বিপদে তার শাসিত।” "যথার্থ দোসর চিনব কী করে।” “নক্ষত্রের স্বহস্তে স্বাক্ষর-করা দলিল আছে।” আর লকোনো চলল না। আমার বশর অজিতকুমার ভট্টাচার্য। বনেদি পণ্ডিত-বংশে তাঁর জন্ম। বাল্যকালকেটেছে চতুষ্পাঠীর আবহাওয়ায়। পরে কলকাতায় এসে কলেজে নিয়েছেন এম.এ. ডিগ্রি গলি- "লত জ্যোতিষে তাঁর যেমন বিশ্বাস ছিল তেমনি বাংপত্তি। তাঁর বখাঞ্জি নৈয়ায়িক, ঈশ্বর তাঁর মতে অসিন্ধ; আমার বশরও দেবদেবী किझ" তার প্রমাণ পেয়েছি। তাঁর সমস্ত বেকার বিশ্বাস ভিড় করে এসে প৷ে র উপর, একরকম গোঁড়ামি বললেই হয়। এই ঘরে জন্মেছে সনে, থৈকে তার চার দিকে গ্রহনক্ষত্রের কড়া পাহারা। আ৷ অধ্যাপকের প্রিয় ছাত্র, সনেত্রাকেও তার পিতা দিতেন শিক্ষা। পরস্পর মে, যোগ হয়েছিল বারবার। সংযোগটা যে ব্যথ হয় নি সে খবরটা বেতার বিদ্যদবাতায় আমার কাছে ব্যক্ত হয়েছে। আমার শাশুড়ির নাম বিভাবতী। সাবেক কালের আওতার মধ্যে তাঁর জন্ম বটে, কিন্তু স্বামীর সংসগে তাঁর মন ছিল সংস্কারমন্তে, স্বচ্ছ। স্বামীর সঙ্গে প্রভেদ এই গ্রহনক্ষত্র তিনি একেবারেই মানতেন না, মানতেন আপন ইস্টদেবতাকে। এ নিয়ে স্বামী একদিন ঠাট্টা করতে । বলেছিলেন, “ভয়ে ভয়ে তুমি পেয়েদাগুলোর কাছে সেলাম ঠুকে বেড়াও, আমি মানি স্বয়ং রাজাকে।” স্বামী বললেন, “ঠকবে। রাজা থাকলেও যা, না থাকলেও তা; লাঠি-ঘাড়ে নিশ্চিত আছে পেয়াদার দল।" শাশুড়ি-ঠাকরন বললেন, “ঠকব সেও ভালো। তাই বলে দেউড়ির দরবারে গিয়ে নাগরা জনতোর কাছে মাথা হে’ট করতে পারব না।” আমার শাশুড়ি আমাকে বড়ো স্নেহ করতেন। তাঁর কাছে আমার মনের কথা ছিল অবারিত। অবকাশ কঝে একদিন তাঁকে বললেম, “মা, তোমার নেই ছেলে, আমার নেই মা। মেয়ে দিয়ে আমাকে দাও তোমার ছেলের জায়গাটি। তোমার সম্মতি পেলে তার পরে পায়ে ধরব অধ্যাপকের।” তিনি বললেন, “আধ্যাপকের কথা পরে হবে বাছা, আগে তোমার ঠিকুজি এনে দাও আমার কাছে।” দিলেম এনে। তিনি বললেন, “হবার নয়। অধ্যাপকের মত হবে না। অধ্যাপকের মেয়েটিও তার বাপেরই শিষ্যা।”