পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ෆ6 දී গল্পগুচ্ছ প্রস্তুত হইল। বিশ্বাসঘাতক পিতার গহ আমার নিকট নরকের মতো বোধ হইল। ক্ষোভে দুঃখে লক্ষজায় ঘণায় বক ফাটিয়া যাইতে লাগিল, তব চোখ দিয়া এক ফোঁটা জল বাহির হইল না। আমার ভাঁর ভ্রাতার পরিচ্ছদ পরিয়া ছদ্মবেশে অতঃপর হইতে বাহির হইয়া গেলাম, কাহারও দেখিবার অবকাশ ছিল না। তখন ধলো এবং বারদের ধোঁয়া, সৈনিকের চিৎকার এবং বন্দকের শব্দ থামিয়া গিয়া মৃত্যুর ভীষণ শান্তি জলস্থল-আকাশ আচ্ছন্ন করিয়াছে। যমনার জল রক্তরাগে রঞ্জিত করিয়া সন্য অস্ত গিয়াছে, সন্ধ্যাকাশে শুক্লপক্ষের পরিপর্ণপ্রায় চন্দ্রমা। রণক্ষেত্র মৃত্যুর বিকট দশ্যে আকীর্ণ। অন্য সময় হইলে কর্ণায় আমার বক্ষ ব্যথিত হইয়া উঠিত, কিন্তু সেদিন সব নাবিস্টের মতো আমি ঘরিয়া ঘুরিয়া বেড়াইতেছিলাম, খুজিতেছিলাম কোথায় আছে কেশরলাল, সেই একমাত্র লক্ষ্য ছাড়া আর সমস্ত আমার নিকট অলীক বোধ হইতেছিল। খুজিতে খুজিতে রাত্রি দ্বিপ্রহরের উক্তজবল চন্দ্রালোকে দেখিতে পাইলাম, রণক্ষেত্রের অদরে যমনার তীরে আম্রকাননচ্ছায়ায় কেশরলাল এবং তাঁহার ভক্তভূত্য দেওকিনন্দনের মতদেহ পড়িয়া আছে। বঝিতে পারিলাম, সাংঘাতিক আহত অবস্থায়, হয় প্রভু ভৃত্যকে অথবা ভৃত্য প্রভুকে, রণক্ষেত্র হইতে এই নিরাপদ পথানে বহন করিয়া আনিয়া শান্তিতে মৃত্যুহতে আত্মসমপণ করিয়াছে। প্রথমেই আমি আমার বহুদিনের বর্ভূক্ষিত ভক্তিব্যত্তির চরিতার্থতা সাধন করিলাম। কেশরলালের পদতলে লাঠিত হইয়া পড়িয়া আমার আজানবিলম্বিত কেশজাল উন্মুক্ত করিয়া দিয়া বারবার তাঁহার পদধলি মাছিয়া লইলাম, আমার উত্তপ্ত ললাটে তাঁহার হিমশীতল পাদপদ্ম তুলিয়া লইলাম, তাঁহার চরণ চুম্বন করিবামার বহুদিবসের নিরন্ধ আশ্ররোশি উদ্বেল হইয়া উঠিল। এমন সময়ে কেশরলালের দেহ বিচলিত হইল, এবং সহসা তাঁহার মুখ হইতে বেদনার অসফট আতসবর শনিয়া আমি তাঁহার চরণতল ছাড়িয়া চমকিয়া উঠিলাম; শুনিলাম, নিমলিত নেত্রে শকে কণ্ঠে একবার বলিলেন, 'জল । আমি তৎক্ষণাৎ আমার গাত্রবস্ত্র যমনার জলে ভিজাইয়া ছটিয়া চলিয়া আসিলাম। বসন নিংড়াইয়া কেশরলালের আমীলিত ওঠাধরের মধ্যে জল দিতে লাগিলাম, এবং বামচক্ষ নষ্ট করিয়া তাঁহার কপালে যে নিদারণে আঘাত লাগিয়াছিল সেই আহত সথানে আমার সিক্ত বসনপ্রান্ত ছিড়িয়া বধিয়া দিলাম। এমনি বারকতক যমনার জল আনিয়া তাঁহার মথে চক্ষে সিঞ্চন করার পর অপে আলেপ চেতনার সঞ্চার হইল। আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, আর জল দিব ? কেশরলাল কহিলেন, কে তুমি। আমি আর থাকিতে পারলাম না, বলিলাম, অধীনা আপনার ভক্ত সেবিকা। আমি নবাব গোলামকাদের খাঁর কন্যা।’ মনে করিয়াছিলাম, কেশরলাল আসন্ন মত্যুকালে তাঁহার ভক্তের শেষ পরিচয় সঙ্গে করিয়া লইয়া যাইবেন, এ সখ হইতে আমাকে কেহ বঞ্চিত করিতে পরিবে না। আমার পরিচয় পাইবামায় কেশরলাল সিংহের ন্যায় গজম করিয়া উঠিয়া বলিলেন, বেইমানের কন্যা, বিধমী! মৃত্যুকালে যবনের জল দিয়া তুই আমার ধর্ম নষ্ট করিলি! এই বলিয়া প্রবল বলে আমার কপোলদেশে দক্ষিণ করতলের আঘাত করিলেন, আমি