পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নষ্টনীড় ৪৭১ লাগিল । সে বঝিতে পারিল, তাহার লেখা কাগজে ছাপাইয়া অমল হঠাৎ তাহাকে বিস্মিত করিয়া দিবার সংকল্প করিয়াছিল। অবশেষে ছাপা হইলে পর স্থির করিয়াছিল কোনো-একটা কাগজে প্রশংসাপণ সমালোচনা বাহির হইলে দুইটা একসঙ্গে দেখাইয়া চারার রোষশান্তি ও উৎসাহবিধান করিবে। যখন প্রশংসা বাহির হইল তখন অমল কেন আগ্রহের সহিত তাহাকে দেখাইতে আসিল না। এ সমালোচনায় অমল আঘাত পাইয়াছে এবং চারকে দেখাইতে চাহে না বলিয়াই এ কাগজগুলি সে একেবারে গোপন করিয়া গেছে। চার আরামের জন্য অতিনিভৃতে যে-একটি ক্ষুদ্র সাহিত্যনীড় রচনা করিতেছিল হঠাৎ প্রশংসা-শিলাবটির একটা বড়োরকমের শিলা আসিয়া সেটাকে একেবারে পথলিত করিবার জো করিল। চারর ইহা একেবারেই ভালো লাগিল না। ভূপতি চলিয়া গেলে চার তাহার শোবার ঘরের খাটে চুপ করিয়া বসিয়া রহিল ; সম্মখে সরোরহ এবং বিশ্ববন্ধ খোলা পড়িয়া আছে। খাতা-হাতে অমল চারকে সহসা চকিত করিয়া দিবার জন্য পশচাং হইতে নিঃশব্দপদে প্রবেশ করিল। কাছে আসিয়া দেখিল, বিশ্ববন্ধর সমালোচনা খলিয়া চার নিমগ্নচিত্তে বসিয়া আছে। পুনরায় নিঃশব্দপদে অমল বাহির হইয়া গেল। আমাকে গালি দিয়া চারীর লেখাকে প্রশংসা করিয়াছে বলিয়া আনন্দে চারীর আর চৈতন্য নাই।’ মাহতের মধ্যে তাহার সমস্ত চিত্ত যেন তিক্তস্বাদ হইয়া উঠিল। চার যে মুখের সমালোচনা পড়িয়া নিজেকে আপন গরের চেয়ে মস্ত মনে করিয়াছে, ইহা নিশ্চয় সিথর করিয়া অমল চারার উপর ভারি রাগ করিল। চারর উচিত ছিল কাগজখানা টুকরা টকরা করিয়া ছিড়িয়া আগনে ছাই করিয়া পড়াইয়া ফেলা। চারার উপর রাগ করিয়া অমল মন্দার ঘরের বারে দাঁড়াইয়া সশব্দে ডাকিল, “अञा-दसैँठान् ।” মন্দা। এসো ভাই, এসো। না চাইতেই যে দেখা পেলাম! আজ আমার কী ভাগ্যি। অমল। আমার নতন লেখা দু-একটা শুনবে ? মন্দা। কতদিন থেকে শোনাব শোনাব করে আশা দিয়ে রেখেছ কিন্তু শোনাও না তো। কাজ নেই ভাই— আবার কে কোন দিক থেকে রাগ করে বসলে তুমিই বিপদে পড়বে—আমার কী। অমল কিছু তীব্রস্বরে কহিল, “রাগ করবেন কে। কেনই-বা রাগ করবেন। আচ্ছা সে দেখা যাবে, তুমি এখন শোনোই তো।” মন্দা যেন অত্যন্ত আগ্রহে তাড়াতাড়ি সংষত হইয়া বসিল। অমল সরে করিয়া সমারোহের সহিত পড়িতে আরম্ভ করিল। অমলের লেখা মন্দার পক্ষে নিতান্তই বিদেশী, তাহার মধ্যে কোথাও সে কোনো কিনারা দেখিতে পায় না। সেইজন্যই সমস্ত মুখে আনন্দের হাসি আনিয়া অতিরিক্ত ব্যগ্রতার ভাবে সে শনিতে লাগিল। উৎসাহে অমলের কণ্ঠ উত্তরোত্তর উচ্চ হুইয়া छैठेळन । সে পড়িতেছিল—‘অভিমন্য যেমন গভবাসকালে কেবল ব্যহপ্রবেশ করিতে