পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাবলিওয়ালা Sඑළු রহমতের মখ মহেন্তের মধ্যে কৌতুকহাস্যে প্রফল হইয়া উঠিল। তাহার কন্ধে আজ ঝলি ছিল না, সতরাং ঝালি সম্বন্ধে তাহাদের অভ্যস্ত আলোচনা হইতে পারিল না। মিনি একেবারেই তাহাকে জিজ্ঞাসা করিল, “তুমি বশরেবাড়ি যাবে?” রহমত হাসিয়া কহিল, “সিখানেই যাচ্ছে।” দেখিল উত্তরটা মিনির হাস্যজনক হইল না, তখন হাত দেখাইয়া বলিল, “সসরোকে মারিতাম, কিন্তু কী করিব—হাত বাঁধা।” সাংঘাতিক আঘাত করা অপরাধে কয়েক বৎসর রহমতের কারাদণ্ড হইল । তাহার কথা একপ্রকার ভুলিয়া গেলাম। আমরা যখন ঘরে বসিয়া চিরাভ্যস্ত-মতো নিত্য কাজের মধ্যে দিনের পর দিন কাটাইতাম তখন একজন স্বাধীন পবতচারী পরিষে কারাপ্রাচীরের মধ্যে যে কেমন করিয়া বষযাপন করিতেছে, তাহা আমাদের মনেও উদয় হইত না । আর, চঞ্চলহদয়া মিনির আচরণ যে অত্যন্ত লন্জাজনক তাহা তাহার বাপকেও স্বীকার করিতে হয়। সে স্বচ্ছন্দে তাহার পরাতন বন্ধকে বিস্মত হইয়া প্রথমে নবী সহিসের সহিত সখ্য পথাপন করিল। পরে ক্লমে যত তাহার বয়স বাড়িয়া উঠিতে লাগিল ততই সখার পরিবতে একটি একটি করিয়া সখী জটিতে লাগিল। এমনকি, এখন তাহার বাবার লিখিবার ঘরেও তাহাকে আর দেখিতে পাওয়া যায় না। আমি তো তাহার সহিত একপ্রকার আড়ি করিয়াছি। কত বৎসর কাটিয়া গেল। আর-একটি শরৎকাল আসিয়াছে। আমার মিনির বিবাহের সম্বন্ধ স্থির হইয়াছে। পঙ্গার ছটির মধ্যে তাহার বিবাহ হইবে। কৈলাসবাসিনীর সঙ্গে সঙ্গে আমার ঘরের আনন্দময়ী পিতৃভবন অন্ধকার করিয়া পতিগহে যাত্রা করিবে । প্রভাতটি অতি সন্দের হইয়া উদয় হইয়াছে। বর্ষার পরে এই শরতের নতনধৌত বৌদ্ৰ যেন সোহাগায়-গলানো নিম’ল সোনার মতো রঙ ধরিয়াছে। এমনকি, কলিকাতার গলির ভিতবকার ইষ্টকক্তত্ত্বর অপরিচ্ছন্ন ঘোষাঘোষি বাড়িগুলির উপরেও এই রৌদ্রের জাভা একটি অপরূপ লাবণ্য বিস্তার করিয়াছে। আমার ঘরে আজ রারি শেষ হইতে না হইতে সানাই বাজিতেছে । সে বশি যেন আমার বকের পঞ্জরের হাড়ের মধ্য হইতে কাঁদিয়া কদিয়া বাজিয়া উঠিতেছে। করলে ভৈরবী রাগিণীতে আমার আসন্ন বিচ্ছেদবাথাকে শরতের রৌদ্রের সহিত সমস্ত বিশ্বজগৎময় বাপত করিয়া দিতেছে । আক্ত আমার মিনির বিবাহ । সকাল হইতে ভারি গোলমাল, লোকজনের আনাগোনা। উঠানে বশি বধিয়া পাল খাটানো হইতেছে ; বাড়ির ঘরে ঘরে এবং বারান্দায় ঝাড় টাঙাইবার ঠুং ঠাং শব্দ উঠিতেছে ; হাঁকডাকের সীমা নাই। আমি আমার লিখিবার ঘরে বসিয়া হিসাব দেখিতেছি, এমন সময় রহমত আসিয়া गलाय कब्रिग्ना प्रौफ़ाईठ् । আমি প্রথমে তাহাকে চিনিতে পারলাম না। তাহার সে কলি নাই, তাহার সে লম্বা চুল নাই, তাহার শরীরে পবের মতো সে তেজ নাই। অবশেষে তাহার হাসি দেখিয়া তাহাকে চিনিলাম।