পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

झर्नाप्ने SBS ফ্যালফ্যাল করিয়া ঘরের চারি দিকে চাহিল। নিরাশ হইয়া আবার নীরবে দেয়ালের দিকে মুখ করিয়া পাশ ফিরিয়া শইল। বিশ্ববভরবাব তাহার মনের ভাব বুঝিয়া তাহার কানের কাছে মুখ নত করিয়া মদমবরে কহিলেন, “ফটিক, তোর মাকে আনতে পাঠিয়েছি।” তাহার পরদিনও কাটিয়া গেল। ডাক্তার চিন্তিত বিমষ মুখে জানাইলেন, অবস্থা বড়োই খারাপ। বিশ্বম্ভরবাব স্তিমিতপ্রদীপে রোগশয্যায় বসিয়া প্রতি মহেতেই ফটিকের মাতার জন্য প্রতীক্ষা করিতে লাগিলেন। ফটিক খালাসিদের মতো সরে করিয়া করিয়া বলিতে লাগিল, “এক বাঁও মেলে না। দো বাঁও মেলে—এ-–এ না।" কলিকাতায় আসিবার সময় কতকটা রাস্তা সীমারে আসিতে হইয়াছিল, খালাসিরা কাছি ফেলিয়া সরে করিয়া জল মাপিত; ফটিক প্রলাপে তাহাদেরই অনুকরণে করণস্বরে জল মাপিতেছে এবং যে অকল সমুদ্রে যাত্রা করিতেছে, বালক রশি ফেলিয়া কোথাও তাহার তল পাইতেছে না। এমন সময়ে ফটিকের মাতা ঝড়ের মতো ঘরে প্রবেশ করিয়াই উচ্চকলরবে শোক করিতে লাগিলেন। বিশ্বম্ভর বহুকষ্টে তাঁহার শোকোচ্ছাস নিবত্তে করিলে, তিনি শয্যার উপর আছাড় খাইয়া পড়িয়া উচ্চৈঃস্বরে ডাকিলেন, “ফটিক : সোনা ! মানিক আমাৰ ” ফটিক যেন অতি সহজেই তাহার উত্তর দিয়া কহিল, "অ্যা।” মা আবার ডাকিলেন, “ওরে ফটিক, বাপধন রে!” ফটিক আস্তে আস্তে পাশ ফিরিয়া কাহাকেও লক্ষ্য না করিয়া মদ বরে কহিল, “মা, এখন আমার ছয়টি হয়েছে মা, এখন আমি বাড়ি যাচ্ছি।” পৌষ ১২১১