পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সম্পাদক SHO বহুদিন প্রভা আমাকে এমন করিয়া ডাকে নাই এবং স্বেচ্ছাকমে আসিয়া আমাকে এতটুকু আদর করে নাই। তাই আজ সেই স্নেহ পশে আমার হদয় সহসা অত্যন্ত ব্যাকুল হইয়া উঠিল। কিছুক্ষণ পরে ঘরে ফিরিয়া গিয়া দেখিলাম প্রভা বিছানায় শ্যইয়া আছে। শরীর ক্লিষ্টছবি, নয়ন ঈষৎ নিমৗলিত; দিনশেষের ঝরিয়া-পড়া ফলের মতো পড়িয়া আছে। মাথায় হাত দিয়া দেখি অত্যন্ত উষ্ণ ; উত্তপ্ত নিশ্বাস পড়িতেছে; কপালের শির দপ দপ করিতেছে। বঝিতে পারিলাম, বালিকা আসন্ন রোগের তাপে কাতর হইয়া পিপাসিত হৃদয়ে একবার পিতার স্নেহ পিতার আদর লইতে গিয়াছিল, পিতা তখন জাহিরপ্রকাশের জন্য খুব একটা কড়া জবাব কল্পনা করিতেছিল। পাশে আসিয়া বসিলাম। বালিকা কোনো কথা না বলিয়া তাহার দুই জরতপত করতলের মধ্যে আমার হস্ত টানিয়া লইয়া তাহার উপরে কপোল রাখিয়া চুপ করিয়া শ্যইয়া রহিল। জাহিরগ্রাম এবং আহিরগ্রামের যত কাগজ ছিল সমস্ত পড়াইয়া ফেলিলাম। কোনো জবাব লেখা হইল না। হার মানিয়া এত সুখ কখনো হয় নাই। বালিকার যখন মাতা মরিয়াছিল তখন তাহাকে কোলে টানিয়া লইয়াছিলাম, আজ তাহার বিমাতার অন্ত্যেষ্টিক্তিয়া সমাপন করিয়া আবার তাহাকে বকে তুলিয়া লইয়া ঘরে চলিয়া গেলাম। বৈশাখ ১৩oo