পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ミ切'ミ গল্পগুচ্ছ ग्निर्गग्न প্রথম পরিচ্ছেদ পল্লীবাসিনী কোনো-এক হতভাগিনীর অন্যায়কারী অত্যাচারী স্বামীর দম্পকূতিসকল সবিস্তারে বণনপবেক প্রতিবেশিনী তারা অত্যন্ত সংক্ষেপে নিজের রায় প্রকাশ করিয়া কহিল, এমন স্বামীর মুখে আগনে। শনিয়া জয়গোপালবাবর সত্ৰী শশী অত্যন্ত পীড়া অনুভব করিল—স্বামীজাতির মুখে চুরাটের আগন ছাড়া অন্য কোনোপ্রকার আগন কোনো অবস্থাতেই কামনা করা সত্ৰীজাতিকে শোভা পায় না। অতএব এ সম্পবন্ধে তিনি কিঞ্চিৎ সংকোচ প্রকাশ করাতে কঠিনহাদয় তারা বিগণ উৎসাহের সহিত কহিল, এমন স্বামী থাকার চেয়ে সাত-জন্ম বিধবা হওয়া ভালো। এই বলিয়া সে সভাভঙ্গ করিয়া চলিয়া গেল । শশী মনে মনে কহিল, “স্বামীর এমন কোনো অপরাধ কল্পনা করিতে পারি না, যাহাতে তাঁহার প্রতি মনের ভাব এত কঠিন হইয়া উঠিতে পারে।” এই কথা মনের মধ্যে আলোচনা করিতে করিতেই তাহার কোমল হৃদয়ের সমস্ত প্রীতিরস তাহার প্রবাসী স্বামীর অভিমুখে উচ্ছসিত হইয়া উঠিল; শয্যাতলে তাহার স্বামী যে ংশে শয়ন করিত সেই অংশের উপর বাহ প্রসারণ করিয়া পড়িয়া শান্য বলিশকে চুম্বন করিল, বালিশের মধ্যে স্বামীর মাথার আঘাণ অনুভব করিল এবং বর রন্ধ করিয়া কাঠের বক্স হইতে স্বামীর একখানি বহনকালের লুপ্তপ্রায় ফেটোগ্রাফ এবং হাতের লেখা চিঠিগুলি বাহির করিয়া বসিল । সেদিনকার নিস্তবধ মধ্যাহ্ন এইরপে নিভৃত কক্ষে নিজন চিন্তায় পরাতন সমতিতে এবং বিষাদের আশ্রজেলে কাটিয়া গেল । শশিকলা এবং জয়গোপালের যে নবদাস্পত্য তাহা নহে । বাল্যকালে বিবাহ হইয়াছিল, ইতিমধ্যে সন্তানাদিও হইয়ছে। উভয়ে বহুকাল একত্রে অবস্থান করিয়া, নিতান্ত সহজ সাধারণ ভাবেই দিন কাটিয়াছে। কোনো পক্ষেই অপরিমিত প্রেমোচ্ছাসের কোনো লক্ষণ দেখা যায় নাই। প্রায় ষোলো বৎসর একাদিক্ৰমে অবিচ্ছেদে যাপন করিয়া হঠাৎ কমবশে তাহার বামী বিদেশে চলিয়া যাওয়ার পর শশীর মনে একটা প্রবল প্রেমাবেগ জাগ্রত হইয়া উঠিল। বিরহের বারা বন্ধনে যতই টন পড়িল কোমল হৃদয়ে প্রেমের ফসি ততই শক্ত করিয়া অটিয়া ধরিল : ঢিলা অবস্থায় যাহার অস্তিত্ব অনুভব করিতে পারে নাই এখন তাহার বেদনা টন টন করিতে লাগিল। তাই আজ এত দিন পরে এত বয়সে, ছেলের মা হইয়া, শশী বসন্তমধ্যাহ্নে নিজন ঘরে বিরহশয্যায় উন্মেষিতযৌবনা নববধর সন্থস্বপ্ন দেখিতে লাগিল। যে প্রেম অজ্ঞাতভাবে জীবনের সম্মখে দিয়া প্রবাহিত হইয়া গিয়াছে সহসা আজ তাহারই কলগীতিশব্দে জাগ্রত হইয়া মনে মনে তাহারই উজান বাহিয়া দুই তীরে বহু দরে অনেক সোনার পর অনেক কুঞ্জবন দেখিতে লাগিল—কিন্তু সেই অতীত সুখসম্পভাবনার মধ্যে এখন আর পদাপণ করিবার স্থান নাই। মনে করিতে লাগিল, “এইবার যখন স্বামীকে নিকটে পাইব তখন জীবনকে নীরস এবং বসন্তকে নিম্ফল