পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ठडिथि ළු එදා অংশটুকুকে প্রচুর আশ্রজেলধারায় অতি শীঘ্রই নিঃশেষে ধৌত করিয়া ফেলিয়াছিল। অবশেষে এই স্নেহদ্রবল নির্যপায় অভিভাবকবয় বালিকার প্রস্তাব গভীরভাবে গ্রাহ্য করিলেন। চার মাস্টারের নিকট তারাপদর সহিত একত্র অধ্যয়নে নিষন্তে হইল। কিন্তু পড়াশনা করা এই অস্থিরচিত্ত বালিকার স্বভাবসংগত ছিল না। সে নিজে কিছু শিখিল না, কেবল তারাপদর অধ্যয়নে ব্যাঘাত করিতে লাগিল। সে পিছাইয়া পড়ে, পড়া মুখপথ করে না, কিন্তু তব কিছুতেই তারাপদর পশ্চাবতী হইয়া থাকিতে চাহে না। তারাপদ তাহাকে অতিক্ৰম করিয়া নতেন পড়া লইতে গেলে সে মহা রাগারগি করিত, এমন কি কান্নাকাটি করিতে ছাড়িত না। তারাপদ পুরাতন বই শেষ করিয়া নতেন বই কিনিলে তাহাকেও সেই নতন বই কিনিয়া দিতে হইত। তারাপদ অবসরের সময় নিজে ঘরে বসিয়া লিখিত এবং পড়া মুখপথ করিত, ইহা সেই ঈষাপরায়ণা কন্যাটির সহ্য হইত না ; সে গোপনে তাহার লেখা খাতায় কালী ঢালিয়া আসিত, কলম চুরি করিয়া রাখিত, এমন কি বইয়ের যেখানে অভ্যাস করিবার, সেই অংশটি ছিড়িয়া আসিত। তারাপদ এই বালিকার অনেক দৌরাত্ম্য সকৌতুকে সহ্য করিত, অসহ্য হইলে মারিত, কিন্তু কিছুতেই শাসন করিতে পারিত না। দৈবাৎ একটা উপায় বাহির হইল। একদিন বড়ো বিরক্ত হইয়া নিরপোয় তারাপদ তাহার মসীবিলাপত লেখা খাতা ছিন্ন করিয়া ফেলিয়া গভীর বিষয়মুখে বসিয়া ছিল; চার বারের কাছে আসিয়া মনে করিল, আজ মার খাইবে । কিন্তু তাহার প্রত্যাশা পণ হইল না। তারাপদ একটি কথামাত্র না কহিয়া চুপ করিয়া বসিয়া রহিল। বালিকা ঘরের ভিতরে বাহিরে ঘরে ঘরে করিয়া বেড়াইতে লাগিল। বারবার এত কাছে ধরা দিল যে, তারাপদ ইচ্ছা করিলে অনায়াসেই তাহার পঠে এক চপেটাঘাত বসাইয়া দিতে পারিত। কিন্তু সে তাহা না দিয়া গম্ভীর হইয়া রহিল। বালিকা মহা মুশকিলে পড়িল । কেমন করিয়া ক্ষমা প্রাথনা করিতে হয় সে বিদ্যা তাহার কোনোকালেই অভ্যাস ছিল না, অথচ অনন্তপ্ত ক্ষুদ্র হদয়টি তাহার সহপাঠীর ক্ষমালাভের জন্য একান্ত কাতর হইয়া উঠিল। অবশেষে কোনো উপায় না দেখিয়া ছিন্ন খাতার এক টুকরা লইয়া তারাপদর নিকটে বসিয়া খাব বড়ো বড়ো করিয়া লিখিল, “আমি আর কখনও খাতায় কালি মাখাব না।” লেখা শেষ করিয়া সেই লেখার প্রতি তারাপদর মনোযোগ আকর্ষণের জন্য অনেকপ্রকার চাঞ্চল্য প্রকাশ করিতে লাগিল। দেখিয়া তারাপদ হাস্য সম্বরণ করিতে পরিল না-- হাসিয়া উঠিল। তখন বালিকা লক্ষজায় ক্ৰোধে ক্ষিপ্ত হইয়া উঠিয়া ঘর হইতে দ্রুতবেগে ছটিয়া বাহির হইয়া গেল। ষে কাগজের টুকরায় সে স্বহস্তে দীনতা প্রকাশ করিয়াছে সেটা অনন্ত কাল এবং অনন্ত জগৎ হইতে সম্পণে লোপ করিতে পারিলে তবে তাহার হালয়ের নিদারণে ক্ষোভ মিটিতে পারিত। এ দিকে সংকুচিতচিত্ত সোনামণি দই-একদিন অধ্যয়নশালার বাহিরে উকিক কি মারিয়া ফিরিয়া চলিয়া গিয়াছে। সখী চারশশীর সহিত তাহার সকল বিষয়েই বিশেষ হাদাতা ছিল, কিন্তু তারাপদর সবন্ধে চারকে সে অত্যন্ত ভয় এবং সন্দেহের সহিত দেখিত। চার যে সময়ে অন্তঃপরে থাকিত, সেই সময়টি বাছিয়া সোনামণি সসংকোচে তারাপদর বারের কাছে আসিয়া দাঁড়াইত। তারাপদ বই হইতে মাখ তুলিয়া সনেহে বলিত, “কণী সোনা, খবর কী। মাসি কেমন আছে।” সোনামণি কহিত, "অনেকদিন যাও নি, মা তোমাকে একবার যেতে বলেছে। মার