পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দয়াশা ○○○ কোনোমতেই তাঁহার সাক্ষাং লাভ করিতে পারি নাই। তিনি ততিয়াটোপির দলে মিশিয়া সেই বিপ্লবচ্ছন্ন আকাশতলে অকস্মাৎ কখনও পাবে, কখনও পশ্চিমে, কখনও ঈশানে, কখনও নৈঋতে, বজ্রপাতের মতো মহেতের মধ্যে ভাঙিয়া পড়িয়া, মহেতের মধ্যে আদশ্য হইতেছিলেন। আমি তখন যোগিনী সাজিয়া কাশীর শিবানন্দস্বামীকে পিতৃসম্বোধন করিয়া তাঁহার নিকট সংস্কৃত শাস্ত্র অধ্যয়ন করিতেছিলাম। ভারতবর্ষের সমস্ত সংবাদ তাঁহার পদতলে আসিয়া সমাগত হইত, আমি ভক্তিভরে শাস্ত্র শিক্ষা করিতাম এবং মমান্তিক উদ্বেগের সহিত যন্ধের সংবাদ সংগ্ৰহ করিতাম। ক্লমে ব্রিটিশরাজ হিন্দুস্থানের বিদ্রোহবহ্নি পদতলে দলন করিয়া নিবাইয়া দিল । তখন সহসা কেশরলালের সংবাদ আর পাওয়া গেল না । ভীষণ প্রলয়ালোকের রক্তরশিমতে ভারতবষের দরদ রান্তর হইতে যে-সকল বীরমতি ক্ষণে ক্ষণে দেখা যাইতেছিল, হঠাৎ তাহারা অন্ধকারে পড়িয়া গেল । তখন আমি আর থাকিতে পারিলাম না। গরের আশ্রয় ছাড়িয়া ভৈরবীবেশে সাবার বাহির হইয়া পড়িলাম। পথে পথে, তাঁথে তীথে", মঠে মন্দিরে ভ্রমণ করিয়াছি, কোথাও কেশরলালের কোনো সন্ধান পাই নাই । দই-একজন যাহারা তাহার নাম জ্ঞানিত, কহিল, সে হয় যন্ধে নয় রাজদণ্ডে মাতু লাভ করিয়াছে । আমার অন্তরক্সা কহিল, কখনও নহে, কেশরলালের মৃত্যু নাই । সেই ব্ৰাহয়ণ, সেই দুঃসহ জলদাপন কখনও নিব':ণ পায় নাই, আমার আত্মাহুতি গ্রহণ করিবার জন্য সে এখনও কোনো পগমি নিজ’ন ষজ্ঞবেদীতে উধনশিখা হইয়া জনলিতেছে । BBBBB BBBS BBB BB BBBBB BB BBB BBB BBBBBS BBBBB ব্রাহরণ হইতে পারে কি না সে কথার কোনো উল্লেখ নাই, তাহার একমাত্র কারণ, তখন মসলমান ছিল না। আমি জনিতাম, কেশরলালের সহিত আমার মিলনের বহু বিলম্বর আছে, কারণ তৎপর্কে আমাকে ব্ৰাহরণ হইতে হইবে। একে একে ত্রিশ বৎসর উত্তীণ BBBS BB BBBB BBB BB BBBBBB BBBBBB BBBB BBBS BBB সেই ব্রাহমুণ পিতামহীর রক্ত নিকলষেতেজ্ঞে আমার সবাগে প্রবাহিত হইল, আমি মনে মনে আমার সেই যৌবনারম্ভের প্রথম ব্ৰাহরণ, আমার যৌবনশেষের শেষ ব্ৰাহয়ণ, আমার ত্রিভুবনের এক ব্রাহরণের পদতলে সম্পণে নিঃসংকোচে আপনাকে প্রতিষ্ঠিত করিয়া একটি অপরুপ দীপ্তি লাভ করিলাম। যন্ধবিপ্লবের মধ্যে কেশরলালের বীরত্বের কথা আমি অনেক শনিয়াছি, কিন্তু সে কথা আমার হাদয়ে মুদ্রিত হয় নাই। আমি সেই-যে দেখিয়াছিলাম নিঃশব্দে জ্যোৎস্নানিশীথে নিস্তধ যমনার মধাম্রোতে একখানি ক্ষুদ্র নৌকার মধ্যে একাকী কেশরলাল ভাসিয়া চলিয়াছে, সেই চিত্রই আমার মনে অঙ্কিত হইয়া আছে । আমি কেবল অহরহ দেখিতেছিলাম, ব্রাহরণ নিজন স্নোত বাহিয়া নিশিদিন কোন অনিদেশ রহস্যাভিমুখে ধাবিত হইতেছে- তাহার কোনো সঙ্গী নাই, কোনো সেবক নাই, কাহাকেও তাহার কোনো আবশ্যক নাই, সেই নিম’ল আত্মনিমগ্ন পরেযে আপনাতে আপনি সক্ষপণ: আকাশের গ্রহচন্দ্রতারা তাহাকে নিঃশব্দে নিরীক্ষণ করিতেছে। এমনসময় সংবাদ পাইলাম কেশরলাল রাজদণ্ড হইতে পলায়ন করিয়া নেপালে আশ্রয় লইয়াছে। আমি নেপালে গেলাম। সেখানে দীর্ঘকাল বাস করিয়া সংবাদ পাইলাম,